আখরোট কি? আখরোটের উপকারিতা , অপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম ।
শরীরকে সুস্থ রাখতে পুষ্টিকর খাবারের কোন বিকল্প নেই।পুষ্টিকর খাবারের কথা ভাবলেই আমাদের মাথায় আসে বাদামের কথা। বাদাম মানেই আমাদের চোখে ভাসে চিনা বাদাম,কাঠবাদাম ও কাজুবাদাম । এই কয়েক ধরনের বাদাম ছাড়াও বিশেষ এক প্রকারের বাদাম রয়েছে যা পুষ্টিগুণ বিবেচনায় এসব বাদাম থেকে অনেক এগিয়ে যা আখরোট বা Walnut নামে পরিচিত।
আখরোট কি ? আখরোটের পুষ্টি উপাদান সমূহ ?
আখরোট একটি বাদাম জাতীয় ফল ।যার বৈজ্ঞানিক নাম জুগলান্স রেজিয়া । এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল । একটি আখরোটে প্রায় ৬৫% ফ্যাট এবং ১৫% প্রোটিন থাকে । এছাড়াও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড ,পটাশিয়াম, ফাইবার ও সামান্য পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে ।
প্রতি 100 গ্রাম আখরোটের মৌলিক পুষ্টি উপাদান সমূহ ।
উপাদান | পরিমান |
চর্বি | 654kcal |
প্রোটিন | 15.23g |
শর্করা | 13.71g |
চিনি | 2.61g |
ফাইবার | 6.7g |
শ্বেতসার | 0.06g |
খনিজ পদার্থ | 11.5g |
পানি | 4.07g |
আখরোট সাধারণত দুই প্রকারঃ
১. কালো আখরোট
২.বাদামি আখরোট
বাদামি আখরোটের তুলনায় কালো আখরোটে অনেক বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে এবং বাদামি আখরোটের তুলনায় কালো আখরোট সহজলভ্য ও সুলভ ।
আখরোটের উপকারিতাঃ
আখরোটে যেমনই রয়েছে পুষ্টিগণ তেমনি রয়েছে এর উপকারিতা । সু-স্বাস্থ্যের জন্য আখরোটের বিকল্প পাওয়া কঠিন ।চলুন ঘুরে আসি আখরোটের উপকারী দিক থেকেঃ
১. হার্ট ঠিক রাখতেঃ
আমাদের শরীরের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হল হার্ট বা হৃদপিণ্ড । হার্ট ভালো না থাকলে আমাদের সমস্ত শরীর তার শরীর বৃত্তীয় কার্য ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে । বর্তমানে আমাদের দেশে হার্ট এটাকে মৃত্যু হওয়া রোগীর সংখ্যা শতকরা ৩৪ ভাগ।সহজেই বোঝা যায় হার্ট বা হৃৎপিণ্ড ঘটিত রোগ এক প্রকার মহামারীর আকার ধারণ করেছে ।
হার্ট বা হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখার জন্য আখরোট অত্যন্ত উপকারী ।আখরোটে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড ও প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট । ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড হার্টের কার্ডিও ভাস্কুলার সিস্টেমের জন্য বিশেষ উপকারী এবং এতে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট হৃদ যন্ত্রের চাপ কমাতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । এর মাঝে থাকা উদ্ভিজ্জ আলফা ইলিওনিক এসিড হার্টের মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় ।
২.স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেঃ
মানব জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে আমরা আমাদের মস্তিষ্ক বা স্মৃতি-শক্তির উপর নির্ভরশীল । মানুষ তার স্মৃতি-শক্তির উপর নির্ভর করেই বেঁচে থাকে । আমাদের প্রচলিত খাদ্যাভাস এবং শরীরে পুষ্টির অভাবের জন্য অনেক সময় আমাদের স্মৃতি-শক্তি হ্রাস পায় ।
স্মৃতি-শক্তি বৃদ্ধিতে আখরোট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । আখরোটে থাকা ভিটামিন ই, মেলাটোনিন , ওমেগা থ্রি এবং এন্টি-অক্সিডেন্ট মেধাবিকাশে সাহায্য করে। রক্তের মাঝে ফ্রী র্যাডিক্যাল রাসায়নিক পদার্থ বেড়ে গেলে ডিমেনশিয়া রোগ হয় । আখরোটে থাকা ভিটামিন ই ও ফ্লাভনয়েড রক্তের মধ্যে থাকা ফ্রি র্যাডিক্যাল রাসায়নিক পদার্থ কমাতে সাহায্য করে । প্রতিদিন আখরোট খেলে ডিমেনশিয়া রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশই কমে যায় ।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ
শরীরের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই । আখরোটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন বি৬ । যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
৪. অনিদ্রা দূর করনে ও স্ট্রেস কমাতে আখরোটের ভূমিকাঃ
শরীরকে ফিট এবং অ্যাক্টিভ রাখতে ভালো ঘুমের কোন বিকল্প নেই । আখরোটের মধ্যে রয়েছে মেলাটোনিন । যা অধিক পরিমাণে দেহে থাকলে অত্যন্ত ভালো ঘুম হয় । এছাড়াও আখরোটে রয়েছে ওমেগা থ্রি ও ফ্যাটি এসিড যা স্ট্রেস কমায়।
৫. ওজন ঠিক রাখতে আখরোটের ব্যবহার
আখরোটের মাঝে রয়েছে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন ,ফাইবার ওমেগা থ্রি ও ফ্যাটি এসিড যা ওজন ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।
৬.যৌন ক্ষমতা ও শুক্রাণু বৃদ্ধিতে আখরোটের ভূমিকাঃ
দিন কে দিন কর্পোরেট জগত, অনলাইন ও অলসতায় ডুবে থাকা পুরুষদের প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে,যৌন দুর্বলতা ও পুরুষত্ব হীনতা ।যুবকদের মাঝে পর্ণ-গ্রাফি দেখার হার অতিক্রম করেছে বিগত সকল রেকর্ড । এমন অবস্থায় শরীরের ক্ষয় পুরনে ও যৌন ক্ষমতা বাড়াতে আখরোটের বিকল্প নেই । আখরোটে থাকা ভিটামিন ই মেলাটোনিন ও পলিফেনন শুক্রাণুর সংখ্যা ও উৎপাদনে গতিশীলতা আনে । ফলে নিয়মিত আখরোট খেলে পুরুষদেহে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়,দ্রুত বীর্যপাত রোধ হয় ।
৭. টাক পড়া প্রতিরোধ ও ডার্ক সার্কেল থেকে মুক্তিঃ
বর্তমানে টাক পড়া ও চোখের নিচে কালি জমা একটি সামগ্রিক সমস্যা।আখরোটের তেল হালকা গরম করে মাথার স্কাল্পে ও চোখের নিচে লাগালে এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি । তবে লক্ষ্য রাখতে হবে তেলের তাপমাত্রা যেন সামান্য গরম থাকে ।
৮.ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আখরোটঃ
বর্তমানে ডায়াবেটিস মহামারীর আকার ধারণ করেছে । এমন কোন বাড়ি খুঁজেই পাওয়া যাবে না হয়তো যেখানে কোন ডায়াবেটিসের রোগী নেই । নিয়মিত আখরোট খেলে রক্তের শর্করার পরিমাণ ঠিক থাকে ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে ।
৯. চুলের যত্নে আখরোটঃ
চুল একজন মানুষের সৌন্দর্যের প্রধান অংশ । পৃথিবীতে এমন লোক খুব কমই রয়েছে যারা চুলের যত্নে সচেতন নয়। আখরোটে থাকে বায়োটিন যা চুল সোজা করতে ভূমিকা পালন করে ।আখরোটে রয়েছে ফ্যাটি এসিড যা চুলের ফলিকালকে শক্ত করে।আখরোটের তেল খুশকি দূর করে চুল পড়া কমায় ও স্কাল্পকে শক্ত করে।
১০.চেহারার উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে আখরোটঃ
মানুষের বয়স যত বৃদ্ধি পায় ততই ত্বকের বলিরেখা দেখা দিতে থাকে যা মূলত ফ্রি র্যাডিক্যাল ড্যামেজের জন্য হয়ে থাকে ।আখরোটে থাকা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এই ফ্রি র্যাডিক্যাল ড্যামেজের হাত থেকে ত্বককে রক্ষা করে ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় ও ত্বকের বলিরেখা দূর হয়।
১১. ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে আখরোটের ব্যবহারঃ
বর্তমান পৃথিবীতে বড় বড় যতগুলো রোগ রয়েছে,এর মাঝে যে সকল রোগের চিকিৎসা এখনো অনেকটাই আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে তার মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম । যদিও চিকিৎসা শাস্ত্রের অনেক উন্নতি হয়েছে তবুও ক্যান্সারের মতো রোগের এখনো শতভাগ চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়নি ।
যদিও ক্যান্সারের প্রতিষেধক আখরোট নয় তবুও আখরোট এন্টিঅক্সিডেন্ট ও স্বাস্থ্যকর চর্বিতে পরিপূর্ণ। যা আমাদের শরীরের মেটাবলিজম বাড়ায়, স্নায়ুকে তীক্ষ্ণ করে ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় । আখরোটের মাঝে পলিফেনল নামের একটি উপাদান রয়েছে যা gut অনুজিবের সাহায্যে ইউরোলিথিন হয় । ইউরলিথিন এর মাঝে থাকা ইনফ্লামেটরি গুনের কারনে এটি প্রটেস্ট কান্সার , ক্লোন কান্সার বা অন্যান্য কান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমায় ।
১২. গর্ভস্থ শিশুর জন্যঃ
আখরোট মাতৃ গর্ভে থাকার শিশুর জন্যেও সমান উপকারী । গর্ভা অবস্থায় মায়েরা খাবারের ডায়েটে আখরোট খেলে , আখরোটে থাকা পলি আন স্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড মায়ের গর্ভে থাকা শিশুর এলার্জি দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে ।
গর্ভাবস্থায় ফোলেট এর ঘাটতি শিশুর মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ড সম্পর্কিত রোগের সৃষ্টি করে। আখরোট ফোলেট এর ঘাটতি পুরনে খুবই সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
১৩. হাড় ও দাত শক্ত করতে আখরোটের ভূমিকাঃ
আপনার হাড় ও দাঁতকে শক্ত করতে আখরোটের বিকল্প নেই আখরোটে থাকা আলফা লিনো লেনিক এসিড হাড় ও দাঁতকে প্রচন্ড শক্তিশালী করে ।
১৪. ফাংগাল ইনফেকশন সারাতে ভূমিকাঃ
ফাংগাল ইনফেকশন সারাতে কালো আখরোট অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে
১৫. পেটের জন্য আখরোটের উপকারিতাঃ
আখরোট পেটের জন্য খুবই উপকারী খাদ্য । এতে থাকা ফাইবার খাদ্য হজমে সাহায্য করে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয় ।
১৬. ত্বক কে আদ্র রাখতে আখরোটের ভূমিকাঃ
শুষ্ক ত্বককে মশ্চারাইজ করতে ও ত্বকে পুষ্টি যোগাতে আখরোট থেকে প্রাপ্ত তেল ব্যবহার করা হয় ।
১৭. আখরোটের বার্ধক্য ধীর করণ প্রক্রিয়াঃ
দেহের বয়স হলে বার্ধক্য আসবেই এ প্রক্রিয়া থেকে কোন মানুষই মুক্ত নয় । কিন্তু কিছু সুস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ও ডায়েট মেনে চললে শরীরে বার্ধক্যের রেশ ধীরে ধীরে বোঝা যায় । খাবারের ডায়েটে আখরোট সংযোজন করলে একদিকে তা আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির পরিমাণ পূরণ করে অপরদিকে সুষম পুষ্টিগুণের কারণে আমাদের শরীরে বার্ধক্যের চিহ্ন ধীরে ধীরে ফুটে ওঠে, আমাদের শরীর প্রয়োজনের অতিরিক্ত বুড়িয়ে যায় না বা দুর্বল হয় না ।
১৮. কোলেস্টরল কমাতেঃ
মানুষের দেহের সুস্থতার জন্য কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রনে থাকা অত্যন্ত জরুরী।কোলেস্টরল কম থাকলে হৃদপিণ্ড বা হার্ট ভালো থাকে।
আখরোট খেলে খুব অল্প সময়ের মাঝে শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায় এবং রক্তে থাকা ব্লাডের ভেসেলেরও নমনীয়তা বেড়ে যায় ।
১৯. প্রদাহ বা ইনফ্লামেশন দুরিকরনে আখরোটের উপকারিতাঃ
অনেক রোগের মূল হচ্ছে প্রদাহ । অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এর ফলে প্রদাহ হয় যা হৃদ রোগ , কান্সার , ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগেরও ঝুঁকি বাড়ায়।
২০. মৃগী রোগ দূর করনে আখরোটের ভূমিকাঃ
আখরোট এর মধ্যে রয়েছে এন্টি কনভালসেন্ট যা মৃগী রোগ প্রতিরোধে শরীরকে সাহায্য করে ।
আখরোটের অপকারিতাঃ
আখরোট অত্যন্ত পুষ্টিকর ও উপকারী ফল। যদিও এর অনেক উপকারী দিক রয়েছে তবুও কিছু বিষয়ে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে । অতিরিক্ত ও অনিয়মিত আখরোট খেলে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারেঃ
১.যাদের আখরোটে এলার্জি রয়েছে তাদের অতিরিক্ত আখরোট খাওয়ার ফলে এলার্জির সমস্যা হতে পারে।
২. যাদের হজমে সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য অতিরিক্ত আখরোট না খাওয়াই উত্তম ।
৩. কালো আখরোটে ফাইটেটস থাকে যা শরীরের আয়রন শুষে নেয় ফলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে ।
আখরোট খাওয়ার নিয়মঃ
আখরোট খাওয়ার তেমন বাঁধাধরা কোন নিয়ম নেই তবে ৪\৫ টি আখরোট রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায় ।
আখরোট কোথায় পাওয়া যায়? ও আখরোট সংরক্ষণের উপায়ঃ
আখরোট সাধারণত বাংলাদেশে চাষ হয় না এবং বাংলাদেশের আবহাওয়া আখরোট চাষের উপযোগী ও না। তবে বর্তমানে অনেক ইমপোর্ট কোম্পানি আমাদের দেশে আখরোট ইমপোর্ট করছে ফলে আমাদের দেশের প্রায় সকল সুপার শপেই আখরোট পাওয়া যায় ।
সরাসরি সূর্যের আলো থেকে দূরে শীতল ও শুকনো স্থানে আখরোট সংরক্ষণ করতে হয় ।ফ্রিজে রাখতে চাইলে বায়ু নিরোধক কৌটার মধ্যে রাখতে হবে।
শেষ কথা
পরিশেষে এটা বলাই যায় আখরোট শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী ও পুষ্টিকর খাদ্য । এর উপকারী গুণাগুণের তুলনায় এর ক্ষতিকর দিক নেই বললেই চলে ।এটি একদিকে যেমন আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শরীরকে সচল রাখে অপরদিকে এটি আমাদের দৈনিক খাদ্য তালিকায় যুক্ত হয়ে পুষ্টির অভাবও পূরণ করে। তাই আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে ,রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধিতে ও পুষ্টির অভাব পূরণ করতে আখরোটের বিকল্প নেই ।
রেফারেন্স
1.Livingston G., Sommerlad A., Orgeta V., Costafreda S.G., Huntley J., Ames D., Ballard C., Banerjee S., Burns A., Cohen-Mansfield J., et al. Dementia prevention, intervention, and care. Lancet. 2017;390:2673–2734. doi: 10.1016/S0140-6736(17)31363-6. [PubMed] [CrossRef] [Google Scholar]
2.Huang H.C., Jiang Z.F. Accumulated amyloid-beta peptide and hyperphosphorylated tau protein: Relationship and links in Alzheimer’ s disease. J. Alzheimers Dis. 2009;16:15–27. doi: 10.3233/JAD-2009-0960. [PubMed] [CrossRef] [Google Scholar]
3.Birben E., Sahiner U.M., Sackesen C., Erzurum S., Kalayci O. Oxidative stress and antioxidant defense. World Allergy Organ. J. 2012;5:9–19. doi: 10.1097/WOX.0b013e3182439613. [PMC free article] [PubMed] [CrossRef] [Google Scholar]
4.Chauhan V., Chauhan A. Oxidative stress in Alzheimer’ s disease. Pathophysiology. 2006;13:195–208. doi: 10.1016/j.pathophys.2006.05.004. [PubMed] [CrossRef] [Google Scholar]
5.Bonda D.J., Wang X., Perry G., Nunomura A., Tabaton M., Zhu X., Smith M.A. Oxidative stress in Alzheimer disease: A possibility for prevention. Neuropharmacology. 2010;59:290–294. doi: 10.1016/j.neuropharm.2010.04.005. [PubMed] [CrossRef] [Google Scholar]
6.Wang X., Wang W., Li L., Perry G., Lee H.G., Zhu X. Oxidative stress and mitochondrial dysfunction in Alzheimer’ s disease. Biochim. Biophys. Acta. 2014;1842:1240–1247. doi: 10.1016/j.bbadis.2013.10.015. [PMC free article] [PubMed] [CrossRef] [Google Scholar]
7.Galasko D., Montine T.J. Biomarkers of oxidative damage and inflammation in Alzheimer’s disease. Biomark. Med. 2010;4:27–36. doi: 10.2217/bmm.09.89. [PMC free article] [PubMed] [CrossRef] [Google Scholar]
8.Schwab C., McGeer P.L. Inflammatory aspects of Alzheimer disease and other neurodegenerative disorders. J. Alzheimers Dis. 2008;13:359–369. doi: 10.3233/JAD-2008-13402. [PubMed] [CrossRef] [Google Scholar]
9.Agostinho P., Cunha R.A., Oliveira C. Neuroinflammation, oxidative stress and the pathogenesis of Alzheimer’s disease. Curr. Pharm. Des. 2010;16:2766–2778. doi: 10.2174/138161210793176572. [PubMed] [CrossRef] [Google Scholar]
10.Wang W.Y., Tan M.S., Yu J.T., Tan L. Role of pro-inflammatory cytokines released from microglia in Alzheimer’s disease. Ann. Transl. Med. 2015;3:136. [PMC free article] [PubMed] [Google Scholar]