মাসিকের জন্য কিভাবে প্রস্তুতি নিবেন
এক বোন তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, রমাদ্বানে আমরা মেয়েরা একটা বিশেষ পরিস্থিতির সম্মুখীন হই। আর সেটি হল “পিরিয়ড”।
এটার কারণে যখন আমরা রোযা রাখতে পারিনা, তখন খাবার-দাবার থেকে শুরু করে কুরআন তিলাওয়াত না করা, নামাজ না পড়া ইত্যাদি সবকিছু একরকম লুকিয়ে লুকিয়েই করি। কেউ যদি বুঝে ফেলে পিরিয়ডের কারণে আমি রোযা রাখছিনা, তাহলে লজ্জার বিষয়।
পিরিয়ড মানে অপ্রাপ্ত থেকে প্রাপ্ত হওয়ার নাম।
আমি মনে করি, এই লজ্জাবোধ বড়ই বোকামি। এটা লজ্জার কোন বিষয়ই না। বরং আমাদের মায়ের জাতির জন্য এটা গর্বের বিষয়। পিরিয়ড মানে অপ্রাপ্ত থেকে প্রাপ্ত হওয়ার নাম। মাসিক মানে একটা মেয়ে মা’তে পরিণত হওয়ার নাম। পিরিয়ড মানে সন্তান জন্মদানের এক বিশেষ যোগ্যতার নাম।
তারপর তিনি গর্ব করেই বললেন, ” আমি যখন আমার বাবার হাতে বাজারের লিস্টি দিই, তখন সাথে “সেনোরা”ও লিখে দিই। এতে আমি বিন্দুমাত্র লজ্জাবোধ করিনা”!
এরপর তিনি আবেগের বশে আরো অনেক কথাই বললেন।
পিরিয়ড বা মাসিক নিয়ে প্রতিক্রিয়া
এই বোনটির লেখায় আমার মধ্যে দুইরকম প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমত ভালো লেগেছে এই বিষয়টা যে, তিনি পিরিয়ডকে ঘৃণিত এবং অপমানের জায়গা থেকে বের করে এনে উৎকৃষ্ট ও গৌরবের সুরক্ষিত একটা জায়গায় নিয়ে দাঁড় করিয়েছেন।
এবং যেসব আপুরা এই সময়টাতে লজ্জাবতী গাছের মতোন গুটিয়ে যান, তাদের জন্য তিনি বড় আশার বানী রেখে দিয়েছেন। দেখাতে চেয়েছেন– পিরিয়ড অপমান আর লজ্জার কোন বিষয় না। নারীর যোগ্যতারই আরেক নাম পিরিয়ড! বাহ, মুগ্ধ হয়েছি!
আরও পড়ুন – পেটের ব্যথার ঔষধ কি
কিন্তু কিঞ্চিৎ। মুগ্ধতার জায়গায় কিছুটা বিস্ময় আর কিঞ্চিৎ ক্ষোভ যুক্ত হয়েছে। সব সত্য যে বলার নয় আর সব পরিস্থিতি যে গর্ব করার মত নয়, এটা বোধকরি বোনটির মাথায় আসেনি। পিরিয়ড অবশ্যই একজন নারীর লাজ-শরমের ব্যাপার। কিন্তু অপমানজনক নয়। পিরিয়ড অবশ্যই একজন নারীর বৈশিষ্ট। কিন্তু গৌরবের নয়।
পরিশেষে :
জানিনা, পৃথিবীতে এ পর্যন্ত কোন ছেলে “স্বপ্নদোষ” নিয়ে গর্ব করেছে কিনা। এটাও যে তার অপরিণত থেকে পরিণত হওয়ার নাম, বালক থেকে বাবা হওয়ার নাম– এমন বুদ্ধিবৃত্তিক বিশ্লেষণ করেছে কিনা।
একটা কথা বলে শেষ করি, আমাদের প্রজন্ম খুব আবেগপ্রবণ। কিন্তু চেতনাহীন। আমাদের সন্তানেরা অজায়গায় স্পষ্টবাদী। কিন্তু স্বভাবে-চিত্তে সচেতনহীন।
আরও পড়ুন – নরমেনস ট্যাবলেট কিসের ঔষধ