সতর্কতাসাধারন জ্ঞানস্বাস্থ্য টিপস

ঔষধ খাওয়ার সঠিক নিয়ম | কোন ঔষধ কিভাবে সেবন করবেন।

আমরা অনেকেই ঔষধ খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানিনা, বা জানলেও এ ব্যাপারে অনেকটাই উদাসীন।অল্প শিক্ষিত বা অশিক্ষিত দের বাদই দিলাম! যারা শিক্ষিত তবে সচেতন নয়, এমন অনেক পেশার লোক তো আছেই!  এমনকি ঔষধের ব্যবসায় জরিত আছেন এমন অনেককেই দেখেছি ঔষধ সেবনের  সঠিক নিয়ম মানছেননা। এই জন্য অনেক ধরনের ঔষধই রেজিস্ট্যান্স হয়ে গেছে। অর্থাৎ এই ঔষধটা আর কাজ করছেনা। এভাবে ঔষধের জেনারেশন পাল্টাতে পাল্টাতে একসময় ঔষধই হয়ত খুঁজে পাওয়া যাবেনা। এমনটা হয়েছেও।নিয়ম না জানার কারনে, এমন অসহায়ত্ব অনেক দেখেছি। এমন সব বিষয় নিয়েই আজকের লেখা কোন ঔষধ কিভাবে সেবন করবেন?

কোন ঔষধ কিভাবে সেবন করবেনঃ

এন্টিহিস্টামিন:

এধরনের ঔষধগুলো সাধারনত রোগ সেরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সেবন করতে হয়। যেমন – সিটিরিজিন,  কেটোটিফেন, ফেক্সোফনাডিন, রুপাটাডিন জাতীয় ঔষধ ইত্যাদি।এগুলোর সেবন বিধি আবার ভিন্ন মাত্রায় থাকে। এতেও সাবধানতা অবলম্বন করা উচিৎ।

এন্টি ফাংগালজাতীয় এন্টিবায়োটিক:

সাধারনত ১০ থেকে ৩০ দিন অবদি সেবন করতে হয়। রোগের তীব্রতা অনুযায়ী। যেমন – ফ্লকোনাজল, কেটোকোনাজল, ইট্টাকোনাজল, লুলিজল ইত্যাদি।

ব্যাথানাশক – NSAID ঔষধ :

একেবারেই প্রয়োজন অনুসারে দিতে হয়। ব্যাথা কমে যাওয়ার পর সেবন বন্ধ করে দেয়া ভাল।প্যারাসিটামল, এসিক্লোফেনাক, কিটোরোলাক, ইটোরিকক্সিব, ইত্যাদি।এই জাতীয় ঔষধের মধ্যে প্যারাসিটামল ব্যাতিত অন্যান্য NSAID ঔষধগুলো খুব সাবধানতা অবলম্বন করে প্রয়োগ করতে হয়। বিশেষ করে ডোজ মেইন্টেইন, বা প্রয়োগকাল সুনির্দিস্ট করে দিতে হয়। ব্যাথাটা কেমন,  কতদিন পর ব্যাথা সেরে যেতে পারে, তার উপর ভিত্তি করে প্রয়োগকাল নির্ধারন করলে রোগীর ইন্টার্নাল কোন সমস্যা হবেনা,  আর একটা বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখা উচিৎ, এগুলোর সাথে এন্টিআলসারেন্ট ঔষধ থাকা বাধ্যতামুলক। না হয় PPI প্রোটন পাম্প ইনফেকশানে ভুগতে পারে।

আরও পড়ুনঃ

এন্টি হাইপারটেনসিভ ঔষধ :

বাংলাদেশে অধিকাংশ স্ট্রোকের বা হার্ট এ্যাটাকের রোগীর ইতিহাস থেকে জানা গেছে, নিজের প্রতি গুরুত্ব না দেয়া বা ঔষধের সেবন সম্পর্কে না জানা – যা ই বলেননা কেন! ডাক্তার দেখানোর পরও অনিয়মিত ঔষধ সেবনের কারনে অনেকের স্ট্রোক বা হার্ট এ্যাটাক হয়।উচ্চ-রক্তচাপ জানার পরেও কেউ কেউ ডাক্তার দেখায়না,  বরং তাদের একটা ধারনা ঔষধ খাওয়া শুরু করলে, খেতেই হবে। না খেলে নাকি কোন সমস্যা হবেনা!  অথচ এরাই একদিন হঠাৎ করে চিৎপঠাং হয়ে যায়! এগুলো হলো না জানার কারনে।গ্রাম ডাক্তাররা যদি এই পোস্টটা পড়ে থাকেন, ওদেরকে খবরটা জানাবেন। তাদেরকে কোন জালেম এই তথ্যটা দিল। সতর্ক করে বলবেন, এখনি ডাক্তার দেখিয়ে এখন থেকেই ঔষধ শুরু করে দিন। এবং গ্যাপ যেন না হয়,  তাতে তিনি ভাল থাকবেন।জীবন পুঞ্জিকা চেঞ্জ তো করতেই হবে, কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ সেবন বন্ধ করে নয়।

এন্টিবায়োটিক ঔষধ :

এন্টিবায়োটিক অর্থাৎ ব্যাকটিরিয়া নাশক ঔষধ সেবনে, আমাদের দেশে অধিকাংশ রোগীই উদাসীন! যা ভয়াবহ ই বলতে পারেন।রোগী তো সে সব বিষয়ে রোগী! ঔষধ বিক্রেতাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছে, যারা এখনও ভাল করে জানেনা, এন্টিবায়োটিক এর মাত্রা মিস করলে কি হতে পারে।বা নিয়মবহির্ভুত সেবনে অকালে জীবনটা শেষ হয়ে যেতে পারে। তাই ঔষধ কেনার পুর্বে, ঔষধ বিক্রেতার কাছ থেকে জেনে নিবেন, এন্টিবায়োটিক কোনটা। এবং ঐ ঔষধ পুর্নমাত্রার কিনে নিবেন (ফুল ডোজ)। যদি কোন কারনবশতঃ ঔষধ আর কিনতে না পারেন, তবে যেন এন্টিবায়োটিক মিস না হয়। কোর্স কমপ্লিট না হওয়া পর্যন্ত ঔষধ চালিয়ে যেতে হবে। যতক্ষন পর্যন্ত ডাক্তার নিষেধ না করেছেন। যদিও কয়েকটা ঔষধ খাওয়ার পরই আপনার রোগ সেরে যায়, তবুও এন্টিবায়োটিক কোর্স কমপ্লিট করতে হবে। যদি না করেন,  এই ঔষধটা পরবর্তীতে এজাতীয় রোগের ক্ষেত্রে কাজ করবেনা। তাই ভুল করবেননা।অনেকেই ঔষধ বিক্রেতাকে দোষারোপ করেন, ঔষধ বিক্রয়ের জন্য নাকি একবস্তা ঔষধ দিয়ে এসব ধান্ধা করেন। হতে পারে, তবে এন্টিবায়োটিক শুধুমাত্র ডাক্তারের কথায় শুরু করবেন, ডাক্তারের দেয়া সময় পর্যন্ত সেবন করবেন।

আজ এপর্যন্তই, আশাকরি বোঝাতে পেরেছি কোন ঔষধ কিভাবে সেবন করবেন । ভাল লাগলে শেয়ার বাটন আছে। কমেন্টে কিছু জানাতেও পারবেন। চাইলে এই পেইজে কিছু লিখতেও পারবেন। এর জন্য রেজিস্টেশন করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
X