সতর্কতাসাধারন জ্ঞানস্বাস্থ্য টিপস

মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন কি ধরনের ক্ষতি করে

স্বাস্থ্য নিয়ে যদি ভেবে থাকেন, তবে সবদিকেই ভাবতে হবে। কোন খাবারে স্বাস্থ্যঝুঁকি। কোন খাবার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কোন কাপড়ে শরীরের তাপমাত্রা স্থিতিশীল থাকে, আবার কোনটায় কম বেশী হয়। এবং তা হলেই বা কোন ক্ষতি হবে কিনা। কোন প্রসাধনী শরীরে উপকারের পরিবর্তে ক্ষতিটাই বেশী করে। অথবা কোনো ডিভাইস ব্যাবহারের ফলে আপনার স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছে কিনা। এসব নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করে চলাই স্বাস্থ্য সচেতনতা। এর জন্যই আপনাকে মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন কি ধরনের ক্ষতি করে তা জানা দরকার।

মোবাইল রেডিয়েশন কি :

অন্যান্য বেতার যন্ত্রের মতই মোবাইলও একটি ফ্রিকুয়েন্সি সিগন্যালের মাধ্যমে কল বা ডাটা আদান প্রদান করে। এই সিগনাল নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হতে একটি বিকিরন তৈরী করতে হয়। এবং যতক্ষন পর্যন্ত ঐ ডিভাইসটি নেটওয়ার্কের সাথে সক্রিয় থাকে ততক্ষন কম বেশী বিকিরন ছড়াতেই থাকে। যেহেতু এটি রেডিও ফ্রিকুয়েন্সির মাধ্যমে কার্য সম্পাদন করে। এবং পোর্টেবল হওয়ার কারনে সংযোগটি সবসময় সমানভাবে গ্রহন করতে পারেনা। কারন, কখনও টাওয়ার দূরে থাকে, আবার কখনও কাছাকাছি চলে আসে। তাই ডিভাইসের এন্টেনায়ও কখনও হালকা কখনও ভারী চাপ পড়ে। তখন রেডিয়েশন কম বা বেশী হয়। এটা শুধু মোবাইল রেডিয়েশন নয়! এফএম, এক্সরে, ওয়াইফাই, মোবাইল টাওয়ার ইত্যাদি অনেক ডিভাইসেই এ ধরনের বিকিরন হয়ে থাকে। তবে এক্সরেতে খুব বেশী পরিমান রেডিয়েশন হয়। মোবাইলে এতটা হয়না এটা ঠিক।

মোবাইল রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব

স্বাস্থ্যবিদগনের ধারনামতে, রেডিয়েশনের একটা প্রভাব থাকবেই, তবে এটা কতখানি হবে। বা কতটুকু বিকিরন একজন মানুষ সহ্য করতে পারবে, যাতে তার স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে না পরে। তা নিয়ে এখনও পরিস্কার হওয়া যায়নি। জার্মানি ও আমেরিকার কয়েকজন গবেষক, এটা নিয়ে বিভিন্ন তথ্য দিয়েছেন। অতিরিক্ত রেডিয়েশন থেকে মানুষের ব্রেনে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ব্রেন টিউমারও হতে পারে। অথবা ব্রনের কোষে বিভিন্ন স্থায়ী বা অস্থায়ী সমস্যা দেখা দিতে পারে। কানে কমশুনা থেকে শুরু করে, গলায় টিউমার, এসবের মারাত্মক ঝুঁকি আছে।

অনেকে বুক পকেটে মোবাইল রাখেন, এটাও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। হার্টের বাল্বের জন্য ক্ষতির কারন হতে পারে। অথবা গ্রামের লুঙ্গি পড়া পুরুষ এবং নারীরা তাদের কোমরে মোবাইল গুজে রাখেন। এতে কিডনীতে চাপ পরতে পারে। রেডিয়েশন বা তড়িৎ কম্পন আমরা সরাসরী হয়ত অনুভব করতে পারিনা। কিন্তু আমাদের নরম কোষগুলো ঠিকই টের পায় এবং এর প্রভাব বুঝতে পারে। এজন্যই অনেক স্বাস্থ্যবিদের ধারনা সাধারন ব্যাবহারকারীর তুলনায় অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তির কোষগুলো দূর্বল থাকে।

মোবাইল রেডিয়েশন থেকে কিভাবে নিরাপদ থাকবেন

মোবাইল এমন একটি ডিভাইস, যা আমাদের সারাদিনের সঙ্গী। তাই মোবাইল ব্যাবহার বন্ধ করাতো সম্ভব নয়। তবে তা যেন বিনা প্রয়োজনে ব্যাবহার না হয়। এবং এর অতিরিক্ত ব্যাবহার বন্ধ করা উচিত। কোমরে বা বুক পকেটে রাখা ক্ষতিকর। এমনকি বিনা প্রয়োজনে বহন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। রাতের বেলায় ঘুমানোর সময় বালিশের পাশে না রেখে, অন্যত্র একটু দূরে রাখুন। বাচ্চদেরকে মোবাইলে সংস্পর্শে রাখবেননা। কারন রেডিয়েশন শারীরিক ওজনের উপর নির্ভর করে প্রভাব ফেলে। তাই বাচ্চারা বেশী ঝুঁকিতে থাকে।

বিনা প্রয়োজনে মোবাইলসেটে ভাইব্রেশন করে রাখবেননা। একটানা দীর্ঘসময় মোবাইলে কথা বললে, কানে ও ব্রেইনে প্রচুর রেডিয়েশন হয়। তাই দীর্ঘসময় কথা বলার অভ্যাস ত্যাগ করুন। নিন্মমানের হ্যান্ডসেট মারাত্মক রেডিয়েশন তৈরী করে। হ্যান্ডসেট কেনার আগে ম্যানুয়েল বা ওয়েবসাইটে রেডিয়েশন লেভেল চেক করে নিবেন।
লাউডস্পিকার, হেডফোন বা ব্লুটুথ ব্যাবহার করতে পারেন। এতে তেজস্ক্রীয় রশ্মির প্রভাব কমানো সম্ভব। চাইলে কোন এক্স-রে টেকনিশিয়ানের কাছ থেকেও জেনে নিতে পারেন। মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন কি ধরনের ক্ষতি করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
X