স্বাস্থ্য টিপস

লিভার ভাল রাখার উপায় | জন্ডিস থেকে মুক্তির উপায়

লিভার ভাল রাখার উপায় সকলেরই জেনে রাখা উচিত। কারন লিভার সুস্থ্য না থাকলে, নানাবিদ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে, অকালে প্রানটাও যেতে পারে। অন্যান্য অঙ্গের মতই তাই লিভারের যত্ন নেয়া খুব জরুরী।
চুলের যত্ন, বা ত্বকের যত্নের কথা কাউকে বলে দিতে হয়না। কারন, এগুলোর যত্ন না নিলে বাহ্যিকভাবে খুব বিশ্রী দেখায়। তাই খেয়ে না খেয়েও কমবেশী সবাই ত্বক ও চুলের যত্ন নিয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের শরীরের এমন কিছু গুরুত্বপুর্ন অঙ্গ আছে, যেগুলোর যত্ন না নিয়ে অবহেলা করলে। অকালে প্রান বিষর্জন দিতে হয়। তারমধ্যে একটি হলো লিভার বা যকৃত।

যকৃত সম্পর্কে কিছু কথা :

মানবদেহের দ্বিতীয় বৃহত্তম গুরুত্বপুর্ন অভ্যন্তরীন অঙ্গ হচ্ছে লিভার। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যাক্তির লিভারের ওজন প্রায় দেড় কেজি পর্যন্ত হয়। হার্টের মত লিভারও কন্টিনিউ কাজ করতে থাকে। দেহে প্রোটিন সংশ্লেষন, হজম প্রক্রিয়া, পিত্ত উৎপাদন, গ্লাইকোজেন স্টোরেজ, হরমোন স্রাব, রক্তে কোষ বিভাজন এর প্রয়োজনীয় জৈব রসায়নিক উৎপাদন ইত্যাদি পরিচালনা করা যকৃতের অন্যতম কাজ। যা মানবদেহের জন্য খুব গুরুত্বপুর্ন। আর এসকল কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্যই লিভার ভাল রাখার উপায় জেনে নিতে হবে।

লিভার বা যকৃত এর যত্ন :

মানবদেহের প্রত্যেকটি অঙ্গেরই নিজস্ব পছন্দ ও অপছন্দ আছে। গবেষনা দ্বারা প্রমানিত – লিভারের সবচেয়ে অপছন্দ হলো, এ্যালকোহল। তারপরের সিরিয়াল – তৈলাক্ত বা অতিরিক্ত ভাজা খাবার। লিভার তখনই বিগড়ে যায়, যখন তাকে তৈলাক্ত বা ভাজাপোড়া কিছু দেয়া হয়। যা সে কখনই পছন্দ,করেনা।

আবার লিভার বেশ দূর্বল হয়ে পড়ে – যখন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার দাবার হয়। দেহের ওজন বেশী হয়ে যায়, এবং আরেকটি গুরুত্বপুর্ন অঙ্গ অর্থাৎ হৃদযন্ত্রে অসুখে ভুগে। তখন লিভারও দূর্বল হয়ে পড়ে। ডায়বেটিস থাকলে তো আরও সমস্যা! এছাড়াও দেহখানা যার, সে যদি ধূমপায়ী হয় বা অতিরিক্ত স্টেরয়েড সেবন করে থাকে।

তবে তার যকৃত যেকোন সময় বিগড়ে যেতে পারে। আর একবার যদি লিভার বিগড়ে যায়, তবে বেঁচে থাকলেও বহুদিন ঘর থেকে বের হতে দিবেনা। তবে, বাঁচার সম্ভাবনা একেবারে কম। বিশ্বাস না হয়, লিভারটাকে বিগড়িয়ে দেখুন।

সহজ উপায়ে লিভারের যত্ন :

এ্যালিসিন সমৃদ্ধ সবজি জাতীয় মসলা রসুন খেতে পারেন নিয়মিত। এতে এন্টিঅক্সিডেন্টও আছে। যা অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে লিভারকে সুরক্ষা দিবে। তবে তা ১-২ কোয়ার বেশী না খাওয়াই ভাল। নিয়মিত অল্প খেলেই ভাল উপকার পাওয়া যায়। গর্ভাবস্থায় ও অপারেশনের পর কাচাঁ রসুন খাওয়া উচিত নয়। কথাটা মনে রাখাও জরুরী।

ব্রকলিতে প্রচুর পরিমানে সালফার আছে। যদিও এটা আমাদের দেশে এখনও সচরাচর হয়নি। তবুও এর উপকার নিয়ে আলোচনা না করলে অন্যায় হবে।
ব্রকলি সাধারনতঃ ফ্যাটি লিভার ও লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে অসাধারন ভুমিকা রাখে। তাই ব্রকলি চাষ ও খাওয়ার অভ্যাস বাড়াতে হবে।

বেটেল নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পাওয়া যায় বীটরুট এ। লিভার ক্যান্সারে অত্যান্ত চমৎকার ফল পাওয়া যায় বীটরুটের রস বা নির্যাস খেলে।
এন্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, খনিজ ও ফাইবারে ভরপুর আরেকটি সহজলভ্য সবজি হলো- গাজর। ফ্যাটি লিভার ও লিভার টক্সিসিটি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে এই গাজর নামক সবজি।

লিভারের চর্বি কমাতে পারে কাঁচা হলুদের রস। এমনকি যারা লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত, তারাও যদি নিয়মিত কাঁচা হলুদের রস খান, সিরোসিসে অত্যান্ত উপকার পাবেন। সকাল ও রাতে ২ চামচ কাঁচা হলুদের রস, একটা টনিকের মতো কাজ করবে।

এছাড়াও ভিটামিন সি যুক্ত খাবার প্রতিদিন তালিকায় রাখবেন। নরম খাবার যকৃতের খুব পছন্দ। তাই শক্ত বা ভাজা খাবার এবোয়ড করার চেস্টা করবেন। এনার্জি ড্রিংক নামক বিষাক্ত পানীয়, ও অতিরিক্ত চা, কফি এগুলো এড়িয়ে যাবেন। লিভার আপনার মুল্যবান একটি অঙ্গ। তাই লিভার ভাল রাখার উপায় জানা আপনার দায়ীত্ব! শুধু জানলেই হবেনা। তা মেনে চলতে হবে। তবেই সুস্থ্য থাকবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
X