এপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ কি | কারন ও প্রতিরোধ
ক্ষুদ্র অন্ত্র ও বৃহদান্ত্রের মিলন স্থলে, সিকামের মধ্যে একটি সরু নলের মতো অংশ সংযুক্ত আছে, তার নাম এপেন্ডিক্স। কোন কারনে এপেন্ডিক্সের প্রদাহ দেখা দিলে, তাকে এপেনডিসাইটিস বলে।
এপেনডিসাইটিস কি:
সাধারনতঃ ৪-২০ বছর বয়স পর্যন্ত এই রোগ হতে পারে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে Appendix ছোট হয়। এপেন্ডিক্স দেখা দেয়ার ২-৩ ঘন্টার মধ্যে ভাল চিকিৎসা না করালে, পরবর্তীতে মারাত্মক আকার ধারন করতে পারে।
এপেন্ডিসাইটিস এর কারন :
Apendicities এ আক্রান্ত হওয়ার সুনির্দিস্ট কোন কারন পাওয়া যায়নি। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস কোস্ঠ্যকাঠিন্য এ রোগ জন্মাতে সহায়ক ভুমিকা রাখে।
থ্রেডওয়ার্ম বা সুতা কৃমি থেকেও এরোগ হতে পারে। সাধারনত স্ট্যাফাইলোক্কাস, স্টেপটোক্কাস ও বি কোলাই জাতীয় ব্যাকটেরিয়া Apendix এ প্রদাহ সৃস্টি করে।
তবে, প্রাথমিক অবস্থায় এসব ব্যাসিলাস ধ্বংশ করতে পারলে, এরোগ সারানো যায়।
এপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষন :
প্রথমে নাভীর ডান দিকে তলপেটে ব্যথা হয়। ব্যথার তীব্রতা ধীরে ধীরে খুব বৃদ্ধি পায়। এবং ব্যথা বেড়ে ক্রমশঃ নাভীর কাছাকাছি আসতে থাকে।
রোগীর হালকা জ্বর আসে, মাঝে মাঝে কমে, আবার কখনও বেড়ে যায়।
বমি বমি ভাব হয় অথবা বমি হয়। নতুন অবস্থায় প্রায়ই বমি হতে পারে। কোষ্ঠ্যকাঠিন্য বা পেট ফাপাবোধ লেগেই থাকে অথবা প্রায়ই দেখা দিতে পারে।
এপেন্ডিক্স অর্থাৎ নাভীর ডান পাশে তলপেটে হাত দিয়ে চাপ দিলে রোগী ব্যথাবোধ করে। এবং তা আগে থেকে ব্যথা না থাকলেও তখন হালকা বা মাঝারী অনুভব হয়।
নাড়ীর গতি স্বাভাবিকের চেয়ে কম বা বেশী থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেশী হয়।
মাঝে মধ্যে আমাশয় বা ডিসেন্ট্রি দেখা দিতে পারে।
এপেন্ডিসাইটিস এর পরীক্ষা :
USG of Abdomen
Blood For TC, DC, Hb, Esp
এপেন্ডিসাইটিস এর অপারেশন :
এপেনডিসাইটিস এর একমাত্র চিকিৎসা অপারেশন করে, এপেন্ডিক্স কেটে ফেলে দেয়া। এতে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থাকেনা। Apendix এর ফোঁড়া অনেক সময় ফেটে যাওয়ার ভয় থাকে। তাই এই রোগের জন্য ব্যতিক্রম কোন চিকিৎসার পরিকল্পনা না করাই উত্তম। কারন এপেন্ডিক্সের ফোঁড়া ফেটে মোট রোগীর ২০-২৫% মারা যায়।
এপেন্ডিসাইটিস প্রতিরোধ :
নিয়মিত কৃমির ঔষধ খেলে এরোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কম। সেই সাথে কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দেখা দেয়া মাত্রই তার চিকিৎসা বা কোষ্ঠ্যকাঠিন্য থেকে বাঁচার জন্য যা প্রয়োজন, তা সঠিক সময়ে সঠিকভাবে করে নেয়া। এ ক্ষেত্রে ঘরোয়া ট্রিটমেন্ট অর্থাৎ ত্রিফলা খুব কাজে আসতে পারে।
অনেকের ধারনা প্রশ্রাব বেশীক্ষন আটকে রাখলে এপেন্ডিসাইটিস হতে পারে। তাই প্রশ্রাব আটকে রাখাও উচিত নয়।