কালোজিরার তেল ও বেলশুঠ এর উপকারিতা জেনে নিন
হারবাল শাস্ত্রে কালোজিরার তেল ও বেলশুঠ, মানবদেহের অনন্য এক উপকারী ভেষজ। যার গুনাগুন সম্পর্কে এখনও গবেষনা অব্যাহত আছে। কিন্তু আমাদের অনেকেই কালোজিরা সম্পর্কে কিছুটা জানলেও, বেলশুঠ সম্পর্কে প্রায় অজানাই বলতে হবে। তাই আজ কালোজিরার সাথে বেলশুঠ এর গুন নিয়ে সংক্ষিপ্ত ধারনা দেয়ার চেস্টা করছি।
কালোজিরা (Nigella)
গাছের বীজ ও বীজের তেল ঔষধার্থে ব্যবহৃত হয়। বীজে অনুদ্বায়ী তেল, ফ্যাটি এসিড, আমিষ, ও একপ্রকার এসেন্সিয়াল অয়েল পাওয়া যায়। এসেন্সিয়াল অয়েলে একটি দানাদার উপাদান, লাইজেন এবং কারভোন ও কারভেন নামক দুইটি টারপিন থাকে। তাছাড়া এতে গ্লাইকোসাইডাল স্যাপোনিন, ম্যালানথিন ও হেডেরোজেনিন উপজাতক, এবং স্যাপোজেনিন মেলানথেজেনিন পাওয়া যায়।
ভিন্ন নাম :
Black Cumin, Small Fennel Seed, Nigella, Black Caraway, Roman Coriander, Holly Seed, Kolanji.
ক্রিয়া :
উদ্দিপক, রক্তচাপ বর্ধক, কফঘ্ন, বায়ুনাশক, পরিপাচক, ক্রিমিনাশক, মুত্রকারক, রজঃস্রাব বর্ধক, ও দুগ্ধবর্ধক।
কার্যকারীতা ও ব্যবহার :
জ্বর, গা ব্যথা, সর্দি, কফ, ব্রঙ্কাইটিস, পেট ব্যথা, বদহজম, বমি, বাত, দুগ্ধ স্বল্পতা, একজিমা, কাঁটাছেড়ায় কালোজিরার তেল কার্যকরী।
কালোজিরার তেল ঔষধ হিসাবে মাত্রা :
সাধারনতঃ কালোজিরা বীজের পরিশোধীত তেল, ২৫০ থেকে ৫০০ মিলিগ্রাম সফট জিলেটিন ক্যাপসুল আকারে বাজারজাত করা হয়ে থাকে।
কোন কোন প্রতিষ্টান কালোজিরাকে পাউডার আকারেও বিক্রি করে। টেবলেট আকারেও প্রস্তুত করা যায়।
(সুত্রঃ বা জা আ ফ)
ঘরোয়া চিকিৎসায় ব্যবহার :
রজঃস্রাবের স্বল্পতার জন্য, ভাতের সাথে কালোজিরার ভর্তা খেলে, মাসিক ক্লিয়ার হয়।
সর্দি কাশিতে কয়েকটি কালজিরা চিবালে উপকার হয়।
কালোজিরা ও মেথি রোজ সকাল ও রাতে নিয়মিত খেলে যৌনশক্তি বৃদ্ধি পায়।
দুগ্ধস্বল্পতায় রোজ ৪-৬ গ্রাম কালোজিরা খেলে স্তনে দুগ্ধ আসে।
কালোজিরা বা কালোজিরার তেল বহু রোগের ঔষধ হিসাবে যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
কালোজিরার যথাযথ ব্যবহারে দৈনন্দিন জীবনে বাড়তি শক্তি অজির্ত হয়। এর তেল ব্যবহারে রাতভর প্রশান্তিপর্ন নিদ্রা হয়। প্রসূতির স্তনে দুগ্ধ বৃদ্ধির জন্য, প্রসবোত্তর কালে কালিজিরা বাটা খেলে উপকার পাওয়া যায়। তবে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কালিজিরা খেলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে। প্রস্রাব বৃদ্ধির জন্য কালিজিরা খাওয়া হয়।
বেলশুঠ :
অপক্ক বা অর্ধপক্ক বেল, আমাশয় ও ডায়রিয়ায় ব্যবহৃত হয়। এর টেনিন উপাদানের প্রটোজুয়াবিরোধী ক্রিয়া আছে।
বীজের নির্যাস জীবানুবিরোধী। ফলে উদ্বায়ী তেলটিও একটি সক্রিয় উপাদান।
কার্যকারীতা :
কোষ্ঠকারক, আমাশয়নাশক, মল নিঃসারক, মৃদু সংকোচক, অ্যামিবানাশক।
দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, অ্যামিবাজনিত আমাশয়, রিটেবল বাউলস এ বেলশুঠ ব্যবহৃত হয়। ( সুত্রঃ বাংলাদেশ জাতীয় আয়ুর্বেদীক ফর্মুলারী)
ঘরোয়া চিকিৎসা :
বিশেষ করে, যাদের পায়খানা জনিত সমস্যা লেগেই থাকে, বা মাঝে মাঝেই পেট খারাপ হয়ে যায়। তারা বাজারে বানিয়াতির দোকান থেকে বেলশুঠ সংগ্রহ করে নিতে পারেন। রোজ রাতে একগ্লাস পানিতে ৩-৪ টুকরো বেলশুঠ ভিজিয়ে রেখে, সকালে পানিটুকু খেয়ে নিলে, পেটের সমস্যা দূর হয়।
ঔষধ আকারে বাজারজাত :
সাধারনতঃ টেবলেট, ক্যাপসুল, লিকুইড সিরাপ ও পাউডার হিসাবে বাজারজাত করা হয়। ডিপলেড নামক ইউনানী ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন কোম্পানি ব্লাকসীড ওয়েল বা বিভিন্ন নামে বাজারে ক্যাপসুল ফরম্যাটে বাজারজাত করে আসছে। নিয়মিত সেবনে এসব রোগে উপকার হয়।