প্রেসার মাপার নিয়ম। হাই প্রেসারের লক্ষন জেনে নিন
খুব সহজে প্রেসার মাপা শিখুন
এই লেখার মাধ্যমে খুব সহজে, প্রেসার মাপা শিখে নিতে পারবেন। এখন এই যুগে সবারই শিখে রাখা উচিত। আজকাল যে হারে প্রসার বা রক্তচাপ এর (উচ্চরক্তচাপ) রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তা নিয়ে চিকিৎসার সাথে জরিত সকলেই সম্ভবত চিন্তিত! আমি যদি ভুল কিছু না বলে থাকি, তাহলে এই প্রেসারের চিন্তা শুধুমাত্র মানবিক চিকিৎসক ব্যতিত, রোগী নিজেও ভাবেনা। কারন, এর ভয়াবহতা সে জানলেতো ভাববে। তাই এর কিছু পরিনতি সম্পর্কে হালকা আলোচনা ও সহজে প্রেসার মাপা শিখিয়ে দেয়ার চেস্টা করবো।
উচ্চরক্তচাপে স্ট্রোক হয় :
দীর্ঘদিন হাই প্রেসার বা উচ্চরক্তচাপ High blood pressure এ ভুগলে, একসময় রোগী স্ট্রোক করতে পারে। ভাগ্য ভাল হলে প্যারালাইজড হয়ে, জীবন্ত লাশ হয়ে বেঁচে যেতে পারে। তবে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই রোগী মারা যায়। এর একমাত্র কারন, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে না রাখা। এর মধ্যে দুশ্চিন্তা ও অনিদ্রা হলো মামাতো ফুফাতো ভাই এর মতো। অর্থাৎ একজন আরেকজনকে সাহায্য সহযোগীতা করেই, স্ট্রোক এর মতো একটা কার্যক্রম সংগঠিত করে।
হাই প্রেসার থেকে হার্টএটাক হয় :
স্ট্রোকের মতই বা তারচেয়েও ভয়াবহ বলতে পারেন হার্টএটাক! স্ট্রোককে যদি ঘার মটকে দেয়া বলেন, হার্টএটাককে বুক জাঝড়া করা বলতে পারেন। অথবা বুকটা টেনে টেনে ছিড়ে ফেলাও বলতে পারেন। অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ এর প্রধান কারন। তবে এখানেই শেষ নয়! কোলেস্টেরল নামক ক্ষতিকারক চর্বি যার শরীরে যতবেশী, সে ততটাই ঝুঁকির মধ্যে আছেন। তার মধ্যে দুশ্চিন্তা, অনিদ্রা ও অনিয়ন্ত্রিত ক্রোধ যাদের আছে, সেতো সোনায় সোহাগা!
শতকরা হারে এটাই বলতে পারি, তিনি কমকরে হলেও ৯৫% ঝুঁকিতে আছেন। আমি ভয় দেখাচ্ছিনা। শুধু বাস্তবটাই তুলে ধরছি। জানিনা এভাবে কেউ আপনাকে বুঝিয়ে বলছে কিনা। তারপরও বলবো প্রতিবেশী কেউ ডাক্তার থাকলে, কথাগুলো মিলিয়ে নিবেন।
স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায় :
নিয়মিত প্রেসার বা রক্তচাপ পরিক্ষা করবেন।
চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে আঁশযুক্ত খাবার বেশী খাবেন। লবন বা অতিরিক্ত লবনজাত খাবার না খাওয়ার চেস্টা করবেন। দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুমাবেন। এবং সকাল সকাল ঘুমানোর চেস্টা করবেন ও সকাল সকাল জেগে উঠবেন। প্রত্যেহ ভোরে একটু কায়িক পরিশ্রম বা ব্যয়াম করবেন। অথবা কিছুটা হাটবেন।
দূশ্চিন্তার কারন খোজে তা সহজ সমাানের চেস্টা করবেন। হতশা দূর করতে সাময়িক ক্ষতি মেনে নিবেন। এতে কিছুটা ক্ষতি হলেও জীবন বিপন্নের হাত থেকে বেঁচে যাবে। ডাক্তারের দেয়া ঔষধ খুব যত্নের সাথে, নিয়ম করে সেবন করবেন। ঔষধ কেনার সামর্থ না থাকলে ডাক্তারকে বলবেন, বিকল্প ঔষধ লিখে দেয়ার জন্য। তবুও ঔষধ সেবন বন্ধ করা যাবেনা।
প্রেসার মাপা শিখুন :
প্রেসার মাপা শেখার আগে, জানতে হবে কি কি লাগবে। এর জন্য আপনাকে যেকোন বড় ফার্ম্মেসী থেকে অথবা এখনতো Online এর যুগ। তাই কেনাকাটাও সহজ, Daraz , alibaba, amazon, bdshop সহ অনেক online E comerce shop আছে। এসমস্থ সাইট থেকে Medical Equeipment সংগ্রহ করা যায়। একটি sphygmomanometer. ও একটি Stethoscope অথবা Digital blood pressure মেশিন কিনে আনতে হবে।
প্রেসার মাপার নিয়ম :
এবার, মেনুয়্যাল মেশিন হলে, কাপড়ের কাফ কে বাম হাতের কুনুই ঘেষে উপরে আটকাতে হবে। যেন রোগীর ধমনীর বরাবর আটকে থাকে। অতপর, কানে লাগানোর জন্য যে মেশিনটা আছে, এর নাম স্থেথিস্কোপ। এর ডায়াফ্রামটি কাফের নিচের অংশে, অর্থাৎ কুনুইয়ের ভাজে ও sphygmomanometer এর দুই নলের মাঝখানে, চামড়ার সাথে লাগিয়ে দিবেন, যেন কোন ফাক না থাকে। তার আগে, ডায়াফ্রামে একটু স্পর্শ করে দেখবেন এটি অন বা চালু আছে কিনা। এটি চালু অথবা বন্ধও করা যায়। নলটি হাত দিয়ে একটু ঘুরিয়ে নিলে চালু অথবা বন্ধ হয়। Stethoscope এর ইয়ার হুক কানে লাগান।
এখন পাম্প করার জন্য একটি পাম্পার দেখতে পাবেন, এটাতে পাম্প করুন। মিটারের ২০০-২৪০ পর্যন্ত পাম্প করতে পারেন। তারপর পাম্পারে থাকা সুইচটি ধীরে ধীরে উল্টোদিকে ঘুরান। এতে কাপড়ের ব্লাডার থেকে বাতাস বের হবে। এবং মিটারের কাঁটা ধীরে কমতে থাকবে। তবে সুইচ স্ক্রু বেশী লুজ করে দিলে, ফলাফল বুঝতে অসুবিদা হবে। তাই খুব ধীরে ধীরে লুজ করতে হবে। একপর্যায়ে আর লুজ করবেননা। এবার মনোযোগ দিয়ে শব্দ শুনার চেস্টা করুন।
দেখুন এক পর্যায়ে একটি শব্দ শুরু হয়ে গেছে। তখনই দেখুন মিটারের কাঁটা কত? ধরুন শব্দ শুরু হয়েছে ১৫০ তে, এবং শেষ হয়েছে ১২০ এ।
তাহলে ফলাফল হলো –
সিস্টোলিক – ১৫০ আর ডায়াস্টলিক – ১২০ অর্থাৎ রোগী Hipertension এর রোগী। তিনি উচ্চরক্তচাপে আছেন। তবে দু একবার চেস্টা করে, নিজকে আগে নিশ্চিত করার পর এই ফলাফল ঘোষনা করবেন। আশাকরি কিছুটা হলেও শিখতে পেরেছেন। আমাদের অন্যান্য লেখা পড়ার আহবান জানিয়ে, আজ এখানেই শেষ করলাম।
আরও পড়ুন –