রোগ নির্নয়সাধারন জ্ঞানহারবাল

সাদাস্রাব কেন হয় | বন্ধ করার উপায়

সাদাস্রাব বা লিকোরিয়া যদিও কোন রোগ না তবুও দীর্ঘদিন সাদাস্রাব থাকার কারণে হতে পারে জরায়ু ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। স্বাস্থ্যহীনতা, ক্ষুদামান্ধা, দুর্বলতা, ইত্যাদি সমস্যায় জড়িয়ে যেতে পারেন।

সাদাস্রাব বা লিকোরিয়া কি ও কেনো হয়?

সাদা রং এর সামান্য গুড়িগুড়ি আটার গুড়ির মতো এবং পিচ্ছিল নয়, এটি জরায়ু ও যোনিপথের সাধারণ নিঃসরণ, যাতে মৃত কোষ ও কিছু ব্যাকটেরিয়া থাকে। এটি এক ধরনের অম্ল (অপরফরপ) নিঃসরণ।
মহিলাদের যোনীপথে এক প্রকার ঘন স্রাব হওয়াকে শ্বেতপ্রদর বা লিকোরিয়া বলে।

সাদাস্রাবের পরিমাণ নারীর জীবনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম হতে পারে। বিশেষ কিছু সময়ে যেমন, যৌন ভাবনা বা উত্তেজনার সময়, ডিম্ব প্রস্ফুটনের সময় (ঋতুচক্রের মাঝামাঝি সময়), মাসিকের আগে ও পরে, গর্ভকালীন সময় ও সদ্য ভূমিষ্ঠ মেয়ে শিশুর ক্ষেত্রে একটু বেশি নিঃসরণ এতটাই স্বাভাবিক যে এটা আপনার যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যের সুস্থতাকেই ইঙ্গিত করে। তবে এই নিঃসরণের স্বাভাবিক মান বজায় রাখা জরুরি, নতুবা তা অস্বাভাবিক সাদা স্রাবে রূপান্তরিত হতে পারে।

অনেক মহিলাদের বিয়ের আগে ও পরে এই রোগ হয়। কিন্তু অনেকে লজ্জায় বা অবহেলা করে নিজের নিকট তা লুকিয়ে রাখে। অনেকে এটাকে তেমন গুরুত্বও দেয়না। তবে ইদানিং মহিলাদের শিক্ষিত হার বেড়ে যাওয়াতে অনেক সচেতনতার সৃষ্টি হয়েছে। এখন একে অন্যের নিকট বিভিন্ন সমস্যার কথা শেয়ার করে। যার কারনে এখন এই রোগের চিকিৎসা করে অনেকে সুস্থ আছেন।

অস্বাভাবিক সাদাস্রাব :

যে স্রাব নিঃসরণে অস্বস্থি বোধ হয় যেমন-

  • বেশি পরিমাণ নিঃসরণ যাতে পরনের কাপড়, পেটিকোট, পাজামা বা প্যান্টি বেশি ভিজে যায়।
  • নিঃসরণের সাথে যোনিপথ ও আশেপাশের অংশ চুলকায়।
  • নিঃসরণের সাথে দুর্গন্ধ বের হয়।
  • নিঃসরণ স্বচ্ছ সাদা, তরল ও পিচ্ছিলের পরিবর্তে বাদামী, সবুজ, হলুদ বা ঘন সাদা থকথকে হয়।
  • ফেনাসাদা বা চাল ধোয়া পানির মতো তরল পদার্থ বের হয়। এধরনের স্রাব হলে অবশ্যই চিকিৎসা করা জরুরী।

সাদাস্রাব বা লিকোরিয়া কেনো হয় ?

সাদা স্রাব হওয়ার পিছনে অনেক গুলো কারন জড়িত।

  • প্রধান কারন হল ইনফেকশন। মহিলাদের জরায়ু “ওপেন অরগ্যান” উন্মুক্ত অংগ গুলোর মধ্যে একটি। যেহেতু জরায়ু উন্মুক্ত থাকে, তাই যে কোন ভাবে এইখানে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।
  • অবিবাহিত মেয়েদের যৌন চাহিদা বেশি কম হওয়ার কারণে সামান্য সাদাস্রাব হতে পারে, এটা এক প্রকার জরায়ু জটিলতা।
    যা বিবাহের পরে ঠিক হয়ে যায়।

-পুরুষের মাধ্যমেও এই রোগ হতে পারে। ট্রাইকোমানো এবং মোনালিয়া এই দু’টি ইনফেকশন যৌন রোগের জীবানু বহনকারী পুরুষের মাধ্যমে স্ত্রীলোকদের মধ্যে সংক্রমিত হয়।

  • মোনালিয়া জীবানু দ্বারা আক্রান্ত জরায়ুতে চুলকানি হয় এবং ব্যথা করে। এক্ষেত্রে ঘন হলুদের মত স্রাব হয়।
  • ট্রাইকোমানো জীবানু দ্বরা আক্রান্ত জরায়ুতে জ্বালাভাব থাকে, চুলকানি হয়, জরায়ু একটু ফুলিয়া যায়, লালচে হয়ে যায়। ফেনাটে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব হয়।
  • পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব ও উপযুক্ত পরিবেশের অভাবের কারনে এই রোগ হতে পারে।
  • জম্ম নিয়ন্ত্রক বড়ি থেকেও এই রোগ হতে পারে।
  • মেয়েদের মাসিক বা ঋতুচক্র আরম্ভ হলে অনেকে ময়লা অপরিষ্কার নেকরা বা কাপড় কিংবা অপরিষ্কার পেন্টি ব্যবহার করেন। যার কারনে জরায়ুতে ইনফেকশান হয়ে এই রোগ হয়।
  • শরীরের যক্ষ্মা, রক্তহীনতা, ভিটামিনের অভাবে এই রোগ হতে পারে
  • হস্তমৈথুন বা মাস্টারবেশন

সাদা স্রাব রোধে পরামর্শ :

  • সহবাসের পর যেসব মহিলাদের লালচে বা গোলাপি স্রাব হয়, তাহাদের খুব শীগ্রি ডাক্তারের নিকট যাওয়া উচিৎ। এমনকি যদি দু’টি পিরিয়ডের মাঝখনে পিংক ডিসচার্জ হয় তাহলেও ডাক্তার দেখাতে হবে। যদি পিরিয়ডের মাঝামাঝি সময়ে পানির মত পাতলা স্রাব হয়, তাহলে ভয়ের কিছু নাই।
  • এই রোগের চিকিৎসা (বিবাহিত হলে) স্বামী স্ত্রী দু’জনকে একসাথে করতে হবে। কেননা স্বামীর নিকট থেকে পরবর্তীতে আবার স্ত্রীর ইনফেকশন হতে পারে।
  • সংক্রমণ এড়াইতে হইলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
  • মাসিক বা ঋতুচক্রে পরিষ্কার জীবানুমুক্ত সুতী কাপড় বা স্যানিটারী নেপকিন ব্যবহার করতে হবে।
  • শ্বেত প্রদর বা সাদা স্রাব যাওয়া অবস্থায় কোন প্রকার মিলন বা সহবাস করা যাবেনা।
  • পুষ্টিকর বা বল বৃদ্ধিকারক খাবার খাইতে হইবে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম এবং বিশ্রাম করতে হবে।
  • জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ির কারণে হলে, একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বন্ধ রাখতে হবে।
    মাসিকের আগে, পরে, মাঝখানে এবং গর্ভাবস্থায় সাদাস্রাব হবে। তবে এটা যদি এমন হয়, তার পোশাক ভিজে যাচ্ছে- তবে তাকে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কিংবা কোনো গন্ধ হচ্ছে বা চুলকানি হচ্ছে তখন অবশ্যই চিকিৎসা লাগবে।

ভেষজ চিকিৎসা :

সাদাস্রাব থেকে মুক্তি পাওয়ার ঘরোয়া ও ভেষজ চিকিৎসা কিছু জেনে রাখা দরকার
রাত্রে ১ মুস্টি আতপ চাল, ১ টি চায়ের কাপে ভিজেয়ে রেখে, সকালে উঠে পানিটুকু খেয়ে নিবেন। সাথে আগের দিন তুলে রাখা কাটানটের মুল শিলপাটায় পিষে ২ চামচ রস খাবেন। এভাবে ৩ সপ্তাহ অব্যাহত রাখবেন। ইনশাল্লাহ, ভাল হয়ে যাবে।

হামদর্দ ল্যাবরেটরী বা যেকোন ভাল হারবাল কোম্পানীর মাস্তুরীন দিনে ২ বার ২ চামচ করে দেড়মাস , এবং ইউনানীর রেহমীন ১-২ টি করে টেবলেট দিনে ২ বার খাবেন দেড়মাস। কাতিলা গম ও তালমাখনা ১ গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে ২ মাস খেতে পারেন। খুব ভাল উপকার পাবেন।

আরও পড়ুন – Sex Tablet for men

হেচকি বন্ধ করার উপায়

ব্যাথার ঔষধ কি ঘুুুমের ঔষধ কি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
X