মানুষিক স্বাস্থ্যসতর্কতাস্বাস্থ্য টিপস

হস্তমৈথুন থেকে মুক্তির উপায় | হস্তমৈথুনের কুফলসহ জেনে নিন।

জেনে নিন- এই আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়! এটা বর্তমান যুব সমাজের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। কারন, হস্তমৈথুনে শুধু স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়না। মানসিকভাবেও বিকারগ্রস্থ করে তুলে। এরই ধারাবাহিকতায় সমাজে নিকৃষ্টতম অন্যায় প্রতিষ্টিত হয়। সুতারাং এর কুফল জানা মাত্রই সজাগ হওয়াটা জরুরী। তাই হস্তমৈথুন থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে আজকের আয়োজন।

আমাদের পুরুষাঙ্গকে এমন একটা ব্যাবস্থায় গঠন করা হয়েছে। এটা যে পথে যাতায়াতের উপযোগী, তাকে সেভাবে ব্যাবহার না করলে, সে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। যেমন – ঠান্ডা আবহাওয়ার কোন গাছকে উষ্ণ আবহাওয়ায় রোপন করলে, তা দিয়ে কোন লাভ হয়না। আবার মরুভুমির লোকদেরকে তুষারের দেশে বেশীদিন টিকিয়ে রাখা যাবেনা। এই যুক্তিটা কিভাবে নিবেন আমি জানিনা। বুঝানোর জন্য বললাম। যৌনাঙ্গকে হস্তমৈথুনের জন্য তৈরী করা হয়নি।

হস্তমৈথুনের কুফল :

হস্তমৈথুনের ফলে পেনিসের টিস্যু নস্ট হয়ে যায়। শিরাগুলো অত্যন্ত দূর্বল হয়ে পড়ে। প্রত্যেক জিনিসেরই একটা ফাউন্ডেশন থাকে। যার উপর ভর করে তার কাজকর্ম চালায়। এই ফাউন্ডেশন ব্যাবস্থা ভেঙ্গে যায়।
দৃষ্টিশক্তি কমায়। স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে। পেশী শক্তি কমে যায়। মামনসিক চিন্তা শক্তির বিকৃতি ঘটে। পরপরুষ ও পরস্ত্রীতে আকৃষ্টতা বাড়ে। খাবারে অনীহা চলে আসে। যৌনবাহীত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বীর্যথলি সংকোচিত হয়। শারীরিক অবকাঠামোর অবনতি হয়। ধর্মীয় অনুশাসন লংঘিত হয়। পরবর্তীতে নিজকে অপরাধী মনে হয়। দাম্পত্য জীবনে অসুখী থাকতে হয়। মেজাজ খিটখিটে থাকাসহ হাজারো সমস্যার সৃস্টি করে এই হস্তমৈথুন।

হস্তমৈথুন ছেড়ে দেয়ার উপায় :

হস্তমৈথুন আসক্তি থেকে, বিভিন্ন বয়সী পুুরুষদের শতকরা ৭০ থেকে ৯৫ শতাংশ। এবং নারীদের ৫০ থেকে ৮৯ শতাংশ হস্তমৈথুনে অভ্যস্ত বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। কিছু বিষয় মেনে চললেই এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।যেকোনো ধরনের নেশা বা আসক্তি থেকে বের হওয়ার জন্য নিজের ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট। তাই প্রথমে ইচ্ছাশক্তিকে দৃঢ় করুন। হস্তমৈথুন থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে লিখার চেস্টা করছি।

যেসব ব্যাপার আপনাকে হস্তমৈথুনের দিকে ধাবিত করে, সেগুলো ছুড়ে ফেলুন, সেগুলো থেকে দূরে থাকুন। কোন কোন সময় হস্তমৈথুন বেশি করেন, সেই সময়গুলো চিহ্নিত করুন। টয়লেটে বা ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি উত্তেজিত থাকেন বা হঠাৎ করে যদি এমন ইচ্ছে হয়, তাহলে শারীরিক পরিশ্রমের কাজে লাগে যান। যেমন বুক ডাউন বা অন্য কোনো ব্যায়াম করতে পারেন। যতক্ষণ না শরীর ক্লান্ত হয়ে যায়, অর্থাৎ হস্তমৈথুন করার মতো আর শক্তি না থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত সেই কাজ বা ব্যায়াম করুন। গোসল করার সময় এমন ইচ্ছা জাগলে শুধু ঠান্ডা পানি ব্যবহার করুন ও দ্রুত গোসল সেরে টয়লেট থেকে বের হয়ে আসুন।

ধৈর্য ধরতে শিখুন। হস্তমৈথুনের কুফল নিয়ে ভাবুন। একদিনেই নেশা থেকে মুক্তি পাবেন, এমনটা হবে না। প্রবল ইচ্ছা থাকলে ধীরে ধীরে যেকোনো নেশা থেকেই বের হয়ে আসা যায়। মাঝেমাঝে ভুল হতে পারে। তখন হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দেবেন না, চেষ্টা করে যান।নারীদের দিকে বাজে দৃষ্টিতে তাকাবেন না।
যতটা সম্ভব নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখুন।

যেকোনো উপায়ে পর্নো চলচ্চিত্র এড়িয়ে চলুন। কম্পিউটারে পর্নো দেখতে দেখতে হস্তমৈথুন করলে, কম্পিউটার লিভিং রুমে নিয়ে যান। যাতে অন্যরাও দেখতে পায়, আপনি কী করছেন। এতে পর্ন সাইটে ঢোকার ইচ্ছে কমে যাবে।

যেসব ব্যাপার আপনাকে হস্তমৈথুনের দিকে ধাবিত করে, সেগুলো ছুড়ে ফেলুন, সেগুলো থেকে দূরে থাকুন। যদি মাত্রাতিরিক্ত হস্তমৈথুন থেকে সত্যি সত্য মুক্তি পেতে চান। তাহলে পর্নো চলচ্চিত্রের কালেকশন থাকলে, সেগুলো এক্ষুনি নষ্ট করে ফেলুন। পুড়িয়ে বা ছিড়ে ফেলুন। হার্ডড্রাইভ বা মেমোরি থেকে এখনই সব ডিলিট করে দিন। ইন্টারনেট ব্যবহারের আগে ব্রাউজারের প্যারেন্টাল কন্ট্রোলে গিয়ে, অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট ব্লক করে দিন। কোনো সেক্স টয় থাকলে এখনই গার্বেজ করে দিন।

হস্তমৈথুন একেবারেই ছেড়ে দিতে হয়ত পারবেননা। তবুও ধর্মীয় অনুশাসন এর কথা মনে করার চেস্টা করুন। এটা নিজ অঙ্গের প্রতি অন্যায় হচ্ছে। এর পরিনাম ভোগ করতে হবে। যারা বাজে বিষয় নিয়ে বা মেয়েদের নিয়ে বা পর্ন চলচ্চিত্র নিয়ে বেশি আলোচনা করে, তাদের এড়িয়ে চলুন।

হস্তমৈথুনে চরমভাবে আসক্ত হলে কখনোই একা থাকবেন না। ঘরে সময় কম কাটাবেন, বাইরে বেশি সময় কাটাবেন। জগিং করতে পারেন, সাইকেল নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। ছাত্র হলে ক্লাসমেটদের সঙ্গে পড়াশোনা করতে পারেন। লাইব্রেরি বা কফি শপে গিয়ে সময় কাটাতে পারেন।

সন্ধ্যার সময়ই ঘুমিয়ে পড়বেন না। বা বেশীরভাগ সময় খাটে শুবেননা। কিছু করার না থাকলে ছবি দেখুন বা বই পড়ুন। ভিডিও গেম খেলতে পারেন। এটাও হস্তমৈথুনের কথা ভুলিয়ে দেবে।

যৌনতার ব্যাপারগুলো একেবারেই এড়িয়ে চলবেন। এ ধরনের কোনো শব্দ বা মন্তব্য শুনবেন না। বিশেষ করে – প্রেম বা কোন মেয়েকে নিয়ে কল্পনায় ভাসবেননা। এটাতে দুটো ক্ষতি – ১. হস্তমৈথুনের ইচ্ছা জাগে। ২. বেহায়াপনা বৃদ্ধি পায়। এবং মেয়েদের প্রতি একটা কুদৃস্টি তৈরী হয়। যা সামনে থাকা অন্য লোকেরা বুঝতে পারে। এতে সমাজে বদনাম ছড়াতে পারে।

টয়লেটে শাওয়ার নেওয়ার সময়, হস্তমৈথুনের অভ্যাস থাকলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বের হয়ে আসতে চেষ্টা করুন। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সবার সঙ্গে বেশি সময় কাটান। ধ্যান বা মেডিটেশন করতে পারেন। যোগব্যায়াম করতে পারেন। ফোনসেক্স এড়িয়ে চলুন। মনে মনে ভাবুন এটা অন্যায়। তার বিপরীতে নিজ নিজ ধর্মীয় আলোচনা শুনুন। একসময় এটাতেই তৃপ্তি পাবেন। ইউটিউবে সার্চ করুন – আবিস্কার, ব্যবসার আইডিয়া, সুস্থ্য থাকার উপায়, রেসিপি, বা বিভিন্ন রকম টপিক খোঁজে দেখুন।

অপরের সাহায্য নিতে ভুল করবেন না। রাতের বেলা হস্তমৈথুন করলে, কারো সঙ্গে রুম শেয়ার করুন বা দরজা-জানালা খোলা রেখে আলো জ্বালিয়ে ঘুমান। যখন দেখবেন যে সব চেষ্টা করেও একা একা সফল হতে পারছেন না। তখন বন্ধুবান্ধব, পরিবার, চিকিৎসকের সাহায্য নিন। এখানে লজ্জার কিছু নাই।উপুর হয়ে ঘুমাবেন না। এই অভ্যাসে কামভাব তৈরী হয়। তাই এটা পরিত্যাগ করবেন। বিকেলের পর উত্তেজক ও গুরুপাক খাবার খাবেন না।

গার্লফ্রেন্ড বা প্রেমিকার সঙ্গে শুয়ে শুয়ে, নির্জনে বসে প্রেমালাপ করবেন না। হস্তমৈথুন থেকে মুক্তির উপায় গুলো নিজ থেকে খোঁজে বের করুন।
যদি হস্তমৈথুনে অতি মাত্রায় আসক্ত হয়ে থাকেন। এবং এর থেকে বের হতে না পারেন। তাহলে বিয়ের পর সঙ্গীর সঙ্গে যৌনসম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না। যা আপনার বৈবাহিক সম্পর্ক ধ্বংস করে দিতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
X