মানুষিক স্বাস্থ্য

মানসিক রোগ সিজোফ্রেনিয়া কি | লক্ষনসহ বিস্তারিত

সিজোফ্রেনিয়া একধরনের মানসিক বিকৃতি। যাতে মেজাজ অল্পতে বিগড়ে যায়, রোগী অসঙ্গত ব্যাবহার করে। তাকে একধরনের পাগলামী বলে। এসব রোগীদের যখন রোগ তীব্র হয়, তখন তারা বিভিন্ন রকম ভুল দেখে বা শুনে। যাকে Hallucinations ও বলে। রোগী অসম্ভব কিছু দেখে ভয় পায়। এবং বিশেষ কিছু শুনতে পায়, যা বাস্তবে বিশ্বাস হওয়ার মতো কিছু নাই। রোগী অসম্ভব কিছু কল্পনা করে, যা বাস্তবের সাথে কোন মিল নেই। যেমন সে যদি আকাশে উড়তো বা সে হয়ত আকাশে উড়ছে, এমন সব অবাস্তব কল্পনা করে বেড়ায়।

সন্দেহ তাদের নিকট প্রকট হয়ে দাড়ায়। কেউ তাকে মেরে ফেলতে চায়, বা মারতে চলে আসছে। অথবা কেউ তার ক্ষতি করতে চায়। এমনকি জ্বীন পরি গল্পও করে বেড়ায়। এই রোগ বংশগত নয়। তাই বলে এই রোগকে অবহেলাও করা যাবেনা। পিতা মাতার পুর্ব পুরুষের ইতিহাস ঘাটলে পাওয়া যেতেও পারে।
অন্যান্য রোগের মতো সিজোফ্রেনিয়া ও একটি মানসিক রোগ। তাই যত দ্রুত সম্ভব তার চিকিৎসার প্রয়োজন। সুচিকিৎসা পেলে ও ঠিক মতো কাউন্সিলিং করতে পারলে, এরোগ থেকে সুস্থ্যতা পাওয়া যায়।

সিজোফ্রেনিয়া এর বিশেষ লক্ষন :

মানসিক রোগের বহিঃপ্রকাশ ঘটে, বিভিন্ন ধরনের লক্ষন ও রোগ চিন্হের উপরে।

  • প্রথম লক্ষনই হলো – রোগীর ভয় বেড়ে যায়।
  • রোগী নিজকে সবচেয়ে বেশী অসহায় বলে মনে করে। তার নিজের কিছু করার ক্ষমতা নাই। বরং সে অন্যের শক্তিতে চলে।
  • রোগীর মধ্যে একটি ভ্রান্ত বিশ্বাস তৈরী হয়। তার চার পাশে জ্বীন ভুত বা পেত্নী সবসময় বিরাজ করে। এবং কোন এক অশুভ শক্তি তার ক্ষতি করছে।
  • রোগী সুষ্ঠভাবে কোন চিন্তা করতে পারেনা।
  • কাজের মনোযোগ নস্ট হয়। বুদ্ধি সংক্রান্ত কোন কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করা কস্টকর হয়।
  • ভুল বকে বা কখনও চুপ থাকে।
  • ডাকলে অনেক সময় সাড়া পাওয়া যায়না।
  • প্রায় সময় ইতস্ততঃ থাকে। ভয়ে লুকাতে চায়।
  • কথার সহিত কাজের মিল পাওয়া যায়না।
  • খাবারে অনীহা তৈরী হয়। এবং ঘুম হয়না বললেই চলে।

সিজোফ্রেনিয়ার চিকিৎসা :

সিজোফ্রেনিয়ার জন্য সাইকোটিক ডাক্তার দেখালে। এবং কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ্য করা যায়। পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো উচিত। ধীরে ধীরে রোগীকে বুঝাতে হবে, সে সম্পুর্ন সুস্থ্য। তার কোন সমস্যা নাই। এবং পারিবারিক ভাবে, সাহস যোগাতে হবে। রোগীর সহিত ভাল আচরন করতে হবে। কখনই বিরক্ত হওয়া যাবেনা। রোগীকে সময়মত ঔষধ খাওয়াতে হবে। এমন কোন বিষয়ে গল্প করতে হবে, যেন রোগী এটা শুনে খুশি হয় বা হাসে। এমন হাসিখুশি অব্যাহত থাকলে রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ্য হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
X