রোগ নির্নয়সতর্কতাসাধারন জ্ঞানস্বাস্থ্য টিপসহারবাল

গণোরিয়া থেকে মুক্তির উপায় | Gonorrhoea Infection | কারন |লক্ষন | বিস্তারিত

বর্তমানে গণোরিয়া একটি মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে। এরোগ নারী পরুষ সবারই হতে পারে। ইহা একটি যৌনবাহিত রোগ বা যৌনরোগ। গণোকক্কাস জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়ে এই রোগ হয়। Gonorrhoea এ আক্রান্ত নারীর সঙ্গে সঙ্গমের ফলে, এই রোগ ছড়ায়। গণোরিয়া সংক্রমন ছড়াতে প্রায় দুই সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। পরুষ থেকে স্ত্রীলোকে এবং স্ত্রীলোক থেকে পুরুষের মধ্যে একইভাবে এরোগ ছড়ায়।

সাধারনতঃ সঙ্গমের ফলে এই রোগ ছড়ায় বলে, এ জাতীয় রোগকে যৌনব্যাধি বা যৌনরোগ বলে। বিভিন্ন নামের মধ্যে মেহ, প্রমেহ, ধাতুরোগ নামেও ডাকা হয়। গনোরিয়া রোগজীবাণু শরীরের অন্য অন্য কোন স্থানে, মিউকাস মেমব্রেন এ লাগলে, ঐ স্থানও আক্রান্ত হতে পারে।

গণোরিয়ার আক্রান্তস্থল :

গণোরিয়া সাধারনতঃ মুত্রথলি, জরায়ু, গর্ভাশয়, পুরুষাঙ্গ, শুক্রথলি, ইত্যাদি স্থানে আক্রান্ত হয়। এবং ক্রমান্বয়ে এই জীবাণু রক্তে প্রবেশ করে, শরীরে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে। মেয়েদের যৌনাঙ্গ থেকে পুঁজ মলদ্বারে গড়িয়ে প্রদাহ হলে, তাকে গনকক্কাল প্রোফাটাইটিস বলে। তবে এরোগ বংশগত ভাবে সংক্রমিত হয়না। কিন্তু গণোরিয়ায় আক্রান্ত মায়ের পেট থেকে সন্তান প্রসবের সময়। এই পুঁজ সন্তানের চোখে পড়লে সন্তানের চোখ অন্ধ হওয়ার আশংকা থাকে। গনোরিয়া জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার ২-১০ দিনের মধ্যে লক্ষন প্রকাশ পেতে পারে।

গণোরিয়ার কারন :

গণোরিয়ার সাধারন কারন হলো, কক্কাস জাতীয় জীবানুর সংক্রমন। অনুবীক্ষন যন্ত্রে দেখলে এই জীবাণু ডট এর মতো দেখায়। এই জীবানুগুলি একত্রে থাকে বলে, তাদেরকে ডিপলোকক্কাস বলে। গনোকক্কাস নামক এক ধরনের ডিপলোকক্কাস থেকেই গণোরিয়া রোগের সৃষ্টি হয়।

এ জাতীয় জীবাণুগুলি নারী অথবা পুরুষের দেহে অবস্থান করে। তবে যৌনমিলনের সময় একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে সংক্রমিত হয়ে থাকে। এই জীবাণু সাধারনতঃ ক্ষত সৃষ্টি করে, এবং ক্ষতস্থান থেকে পুঁজের মাধ্যমে একজনের দেহ থেকে অন্যজনের দেহে সংক্রমিত হয়।

গণোরিয়ার লক্ষন :

  • পুরুষের হলে, তার পুরুষাঙ্গের মাথা চুলকায়। এবং ঐস্থানে আঠালো পদার্থ দেখা দেয়।
  • স্ত্রীলোকের জরায়ু বা মুত্রনালীতে প্রদাহ বা Infection হয়। মুত্রনালী থেকে পুঁজ পড়ে। কখনও কখনও কোন লক্ষন প্রকাশ পায়না।
  • প্রস্রাবের সময় জ্বালা-যন্ত্রনা হয়। প্রস্রাবের সাথে পুঁজ পড়ে।
  • জ্বর জ্বর ভাব থাকতে পারে।
  • বারবার প্রস্রাবের চাপ হয়। প্রস্রাব অল্প অল্প হয় বা হতে পারে।
  • সাদা, হলুদ বা বিভিন্ন রঙের পুঁজ হতে পারে।
  • চোখ, রেকটাম, মলদ্বার প্রভৃতি সংক্রমিত হতে পারে।

গণোরিয়া নির্নয়ের পরিক্ষা :

প্রস্রাব পরীক্ষা করতে হয় ( R / M / E )
রক্তের VDRL করে রোগ নির্নয় করতে হয়।

গণোরিয়ায় সতর্কতা :

  • অবৈধ মেলামেশা করা ত্যাগ করতে হবে
  • একজনের ব্যবহৃত কাপড় অন্যজনের পরিধান করা উচিত নয়। এতে এসব রোগ থাকলে ছড়াতে পারে।
  • লক্ষন প্রকাশের সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া।

গণোরিয়ার ঔষধ:

সাধারনতঃ এ্যালোপ্যাথিক এ সিঙ্গেল ডোজ এন্টিবায়োটিক দিয়ে এরোগের চিকিৎসা করা হয়। যেমন – এজিথ্রোমাইসিন একবারেই ১ গ্রাম। তারপর থেকে অন্যান্য ঔষধ দেয়া হয়ে থাকে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পুরো কোর্স কমপ্লিট করে নিবেন। সাথে সাথে কাটানটের মুল, কাতিলাগম, সহ অনেক ভেষজ আছে, এগুলো নিয়ম করে কিছুদিন খেলে উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও ফেনড্রাগ ইউনানীর জিরিয়ান ঔষধটা গণোরিয়া Infection এ জন্য খুব উপকারী। ইউনানী ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে, জিরিয়ান ২ মাস খেলে আশা করা যায়, এরোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। গণোরিয়া থেকে পুরোপুরি মুক্তি পেতে, মলত্যাগের পরে হাতের কব্জি পর্যন্ত সাবান দিয়ে ধুতে হবে। আরও পরামর্শ পেতে রোগবালাই ওয়েবসাইটে নিয়মিত লেখা পড়ুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
X