স্বাস্থ্য টিপস

খাবারের রুচি বাড়ানোর প্রকৃত ঔষধের নাম |হজমকারক ও রুচিবর্ধক

খাবারের রুচি বৃদ্ধির প্রকৃত ঔষধ অবশ্যই আছে। অনেক ভাল ডাক্তারগন এগুলো সাজেস্ট করেন। তবে, একশ্রেণীর ডাক্তারদের কারনে এগুলোর পরিবর্তে ডেক্সামেথাসন, প্রেডনিসোলন, হাইড্রোকর্টিসন, ও সিপ্রোহেপ্টাডিনের মত ক্ষতিকারক স্টেরওয়েড মিশ্রিত ঔষধে বাজার সয়লাব।

খাবারে রুচি না হওয়ার কারন

খাবারে রুচিহীনতার কোন কারন অবশ্যই আছে। সেগুলো খুজে বের করার চেস্টা করবেন। হয়ত কোষ্ঠ্যকাঠিন্য বা লিভারে গোলযোগ অথবা অন্যান্য কোন কারন থেকে খাবারে অরুচি আসতে পারে। কোষ্ঠ্যকাঠিন্য থেকে অরুচি আসলে, কারমিনেটিভ জাতীয় সিরাপ অন্য ঔষধের সাথে অবশ্যই রাখতে হবে। এবং তা ২-৩ মাস নিয়মিত সেবন করতে হবে।

আমি সাজেশন করবো প্রাপ্ত বয়স্কদের ২-৩ চামচ করে রোজ ৩ বার। আর ব্র্যান্ড হিসাবে উপদেশ দিবো – একমিনা / কারমিনা / মুস্তাকারিস্ট / হাজমিনা। তবে স্কয়ার হারবালের পেপনর সিরাপ আমার কাছে শিশুদের জন্য খুব পছন্দ হয়। অবশ্য বড়রাও চাইলে খেতে পারেন। ছোটদের ১ চামচ করে ২ বার। বড়দের ২ চামচ করে ২ বার। হয়ে গেল বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটফাঁপা, অরুচির সমাধান।

রুচিহীনতার আরেকটি কারন অনিদ্রা

অনিদ্রা খাবারে অরুচি তৈরী করে। বেশী রাতে ঘুমানো ও বেশী বেলা করে যারা ঘুম থেকে জাগার অভ্যাসের দাস! তাদের অনেক সমস্যার মধ্যে একটি হলো – খাবারে অরুচি। তাই বেশী রাত জেগে থাকা ব্যাক্তির খাবারে রুচিহীনতা এটা স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিতে হবে।

এই অভ্যাস পরিত্যাগ করার কিছুদিনের মধ্যেই রুচি ফিরে আসার কথা। তবুও আরও একটা ঔষধের সাজেশন দিচ্ছি- রোহিতকারিস্ট বা দিনার জাতীয় ঔষধে অনিদ্রাজনিত কারনে লিভারের দূর্বলতা দূর করে, খাবারে রুচি বাড়াবে।

গ্যাস্ট্রোপ্রোকাইনেটিক বা এন্টি এমিটিক ঔষধ

গ্যাস্ট্রোপ্রোকাইনেটিক বা এন্টিএমিটিক জাতীয় একটা ঔষধ অন্য ঔষধের সাথে রাখা প্রয়োজন। কারন, এটি পেটফাঁপা ও বমি বমি ভাব দূর করে। উপর পেটের ব্যাথা থাকলেও দূর করে দেয়। অনেক সময় খাবারের রুচি আছে ঠিকই, কিন্তু পেট ভরাভাব এর কারনে, আর খেতে ইচ্ছা হচ্ছেনা। মনে হয় – আর খেলে হয়ত সব বেড়িয়ে চলে আসবে। এজন্য ডমপেরিডন জাতীয় কোন ঔষধ প্রাপ্ত বয়স্কদের ১-২ করে ২ বার অথবা ১ টা করে ৩ বার কোন কিছু খাবার ৩০ মিনিট পুর্বে ২ মাস পর্যন্ত খেতে হবে।

জিংক জাতীয় খাবার রুচি বাড়ায় করে

জিংক জাতীয় খাবার পেটের জন্য খুবই উপকারী। একটু খেয়াল করলে দেখবেন। বাচ্ছাদের সহ কারো পেটের পীড়া হলে। অর্থাৎ ডায়রিয়া আমাশয় হলে – অন্য ঔষধের সাথে জিংক টেবলেট বা সিরাপ ডাক্তাররা দিয়ে থাকেন। কারন জিংক পেটের পীড়াজনিত ক্ষতি পুরন করতে সক্ষম। শুধু তাই নয়, খাবারের রুচি বাড়াতে অনন্য ভুমিকা রাখে জিংক।

ভিটামিন বি কমপ্লেক্স রুচি বাড়াতে কার্যকর

ভিটামিন বি কমপ্লেক্স সিরাপ বা ট্যাবলেট যাই হোক, রুচিবৃদ্ধির জন্য সেবন করতে পারেন। শুধু ভিটামিন বি হলে, প্রাপ্তবয়স্করা ২ চামচ করে দিনে ২-৩ বার খেতে পারবেন। বাজারে জিংক ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্স একসাথে পেটেন্ট করা ঔষধ পাওয়া যায়। যেমন – জিংক বি অথবা বলে বিকোজিন নামে সিরাপ অথবা ট্যাবলেট আছে। প্রাপ্ত বয়স্করা ১ টা করে রোজ ২ বার খেতে পারবেন – ১-২ মাস।

ফলিক এসিড রুচি বৃদ্ধিতে অনন্য ফলপ্রসু

ফলিক এসিড শুধু রক্তস্বল্পতায় ব্যবহার হয়না। বা এটা শুধু গর্ভবতীদেরকেই দেয়ার জন্য নয়। এই ফলিক এসিড খাবারে অরুচি দূর করতে অনন্য ভুমিকা রাখে। অরুচির জন্য অন্যান্য ঔষধের সাথে ফলিক এসিড রোজ ১ বার সেবন করলে, ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে।

বাজারে শুধুমাত্র ফলিক এসিড ঔষধ ভাল কোম্পানীর তেমন একটা নাই। ফলিসন নামে (jayson) জেসন ফার্মাসিউটিক্যাল এর ঔষধটাই বেশ জনপ্রিয় ও আস্থাশীল। রোজ রাতে ১ টা ১-২ মাস খেতে পারেন।

গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি খাবারে রুচি কমায়

গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি থাকলে, খাবারে রুচি কমিয়ে দিবে। পেট ভরা মনে হবে, পেট ফুলে থাকতে পারে। এর জন্য প্রোটন পাম্প ইনহিটর এর বা গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ নিয়মিত সর্বোচ্চ ২ মাস খাওয়া যেতে পারে। আর উপরের ঔষধগুলো খেলে অবশ্যই ১-২ মাস গ্যাস্ট্রিকের ভাল কোন ঔষধ নিয়মকরে খেতে হবে।

আমি সাজেশন করবো ওমিপ্রাজল হলে – পিপিআই / লোসেকটিল / ওমিটিড / ইনপ্রো-২০ ইসোমিপ্রাজল হলে – ম্যাক্সপ্রো / ম্যাক্সিমা / সারজেল / নেক্সক্যাপ ২০ তবে এসব ঔষধ একটানা ২ মাসের বেশী সেবন করা উচিত নয়। বেশীদিন খেলেও খাবার হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। এবার পুরো লেখাটা আবার মিলিয়ে নিন।

খাবারে অরুচির জন্য সবগুলো ঔষধই প্রয়োজন হতে পারে। একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে সবগুলো ঔষধই সেবন করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
X