মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেট কিসের ঔষধ জেনে নিন | Metronidazole 400
মেট্রোনিডাজল ৫ নাইট্রোইমিডাজল গ্রুপের একটি ওষুধ, যা অবায়ুজীবি ব্যাকটেরিয়া এবং প্রোটোজোয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর ।
মেট্রোনিডাজল এর কাজ কি :
মেট্রোনিডাজল -এর ৫ নাইট্রো গ্রুপটি বিজারণ ট্রান্সফরমেশনের মাধ্যমে একটি সক্রিয় বিপাকীয় যৌগ উৎপন্ন করে যা ব্যাকটিরিয়ার DNA- তে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এবং পরিশেষে কোষের মৃত্যু ঘটায় ।
ওষুধের উপর শরীরের ক্রিয়া ( ফার্মাকোকাইনেটিক্স ) :
মুখে সেবনের পর মেট্রোনিডাজল দ্রুত এবং প্রায় সম্পূর্ণরূপে শোষিত হয়, ২০ মিনিট থেকে ৩ ঘন্টা পর সর্বোচ্চ প্লাজমা ঘনত্ব পাওয়া যায় । এর অর্ধায়ু ৮.৫ ° (কমবেশী) ২.৯ ঘণ্টা । দীর্ঘস্থায়ী বুক জটিলতায় মেট্রোনিডাজল ব্যবহার করা যেতে পারে , ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে ইহাকে প্লাজমা থেকে দ্রুত সরানো যায় । মেট্রোনিডাজল দুগ্ধের সাথে নিঃসৃত হয় , কিন্তু স্বাভাবিক মাত্রা গ্রহণকারী মায়ের বাচ্চার জন্য সেবন মাত্রা নির্দেশিত মাত্রার তুলনায় কম হবে ।
মেট্রোনিডাজল -এর উপাদান ও প্যাকেজিং
২০০ মিগ্রা ট্যাবলেট : প্রতি ফিল্ম – কোটেড ট্যাবলেটে আছে মেট্রোনিডাজল বিপি ২০০ মিগ্রা । মেট্রিল ৪০০ মিগ্রা ট্যাবলেট : প্রতি ফিল্ম – কোটেড ট্যাবলেটে আছে মেট্রোনিডাজল বিপি ৪০০ মিগ্রা ও ৫০০ মিগ্রা এবং সাসপেনশন : প্রতি ৫ মিলি – এ আছে মেট্রোনিডাজল বিপি ৩২১.৬ মিগ্রা যা মেট্রোনিডাজল ২০০ মিগ্রা এর সমতুল্য ।
মেট্রোনিডাজল কিসের ঔষধ :
আনুমানিক কারণ অথবা চিহ্নিত অবায়ুজীবি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে প্রতিরোধমূলক এবং চিকিৎসা হিসেবে মেট্রোনিডাজল নির্দেশিত । বহুবিধ রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু প্রজাতি যেমন- ব্যাকটেরয়েড , কিউসোব্যাকটেরিয়া , ক্লস্ট্রিডিয়া , ইউব্যাকটেরিয়া , অবায়ুজীবি কক্কাই ও গার্ডনেরেলা ভ্যাজিনালিস – এর বিরুদ্ধে কার্যকরি । এটি ট্রাইকোমোনাস , এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা , জিয়ারডিয়া ল্যাম্বলিয়া এবং ব্যালানটিডিয়াম কোলাই -এর বিরুদ্ধেও কার্যকরি ।
মেট্রোনিডাজল কি রোগের ঔষধ
ক ) অপারেশন পরবর্তী অবায়ুজীবি ব্যাকটেরিয়া বিশেষভাবে ব্যাকটেরয়েডস এবং অবায়ুজীবি ট্র্যাপ্টোকক্কাই দ্বারা সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশিত ।
খ ) সেপ্টিসেমিয়া , ব্যাকটেরেমিয়া , পেরিটোনাইটিস , ব্রেইন এ্যাবসেস , নেক্রোটাইজিং নিউমোনিয়া , অস্টিওমায়লিটিস , পুরপেৱাল সেপ্সিস , পেলভিক এ্যাবসেস , পেলভিক সেলুলাইটিস এবং অপারেশন পরবর্তী ক্ষতের সংক্রমণ , যা হইতে রোগ সৃষ্টিকারী অবায়ুজীবি জীবাণু পৃথক করা হয়েছে এমন ক্ষেত্রে নির্দেশিত ।
গ ) মহিলা এবং পুরুষের মূত্র – জননতন্ত্রের ট্রাইকোমোনিয়াসিস ( মহিলাদের ক্ষেত্রে ট্রাইকোমোনাল ভ্যাজিনালিস )
ঘ ) ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস ( নন – স্প্যাসিফিক ভ্যাজাইনাইটিস , অবায়ুজীবি ভ্যাজাইনোসিস অথবা গার্ডনেরেলা ভ্যাজাইনাইটিস নামেও পরিচিত ) ।
ঙ) সব ধরনের এমিবিয়াসিস ( ক্ষুদ্রান্ত্র ও বহিঃক্ষুদ্রান্ত্রের রোগ এবং লক্ষণবিহীন সিস্ট )
চ) জিয়ারডিয়াসিস
ছ ) তীব্র ক্ষতজনিত মাড়ীর প্রদাহ
জ ) অবায়ুজীবি দ্বারা সংক্রমিত পায়ের ক্ষত এবং মানসিক চাপজনিত ক্ষত * )
ঝ) দাঁতের তীব্র সংক্রমণ ( যেমন- তীব্র পেরিকোরোনাইটিস এবং তীব্র এপিক্যাল সংক্রমণ )
মেট্রোনিডাজল খাওয়ার নিয়ম :
সেবনমাত্রা মেট্রোনিডাজল অথবা মেট্রোনিডাজল এর সমতূল্য হিসেবে দেয়া হয়েছে । নবজাতক ও শিশুঃ দৈহিক ওজন ১০ কেজির কম হলে আনুপাতিক হারে কম সেবনমাত্রায় গ্রহণ করা উচিৎ ।
প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে ৪০০ মিগ্রা ট্যাবলেট দৈনিক ৩ বার। ৫-৭ দিন পর্যন্ত খাওয়া যাবে। এছাড়াও মেট্রোনিডাজল একেক রোগের জন্য ডাক্তারগন প্রয়োজন অনুসারে ভিন্ন রকম ডোজে দিয়ে থাকেন। এর জন্য অবশ্যই একজন রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ খাবেন।
মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেট এর বিরুদ্ধ ব্যবহার :
মেট্রোনিডাজল – এর ক্ষেত্রে অতিসংবেদনশীলতা আছে এমন ক্ষেত্রে দেয়া যাবে না ।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া : স্বাভাবিক নির্দেশিত মাত্রায় মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কদাচিৎ ঘটে । রুচিহীনতা , মুখগহ্বরের প্রদাহ, লোমশ জিহ্বা , বমি – বমি ভাব , বমি , গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল জটিলতা , ক্ষুধামন্দা , ত্বকে এলার্জিজনিত চুলকানি এবং এনজিওইডিমা মাঝে মধ্যে ঘটে । এনাফাইলেক্সিস সচরাচর ঘটে না । ইরাইথেমা মাল্টিফরম ঘটতে পারে তবে ওষুধ ব্যবহার বন্ধ করলে লক্ষণ দূরীভূত হয় ।
কদাচিৎ অস্বাভাবিক যকৃত কার্যকারিতা ; কোলেস্টেটিক হেপাটাইটিস এবং জন্ডিস , অগ্ন্যাশয়ে প্রদাহ ঘটে তবে ওষুধ বন্ধ করলে দূরীভূত হয় । এগ্র্যানুলোসাইটোসিস , নিউট্রোপেনিয়া , থ্রোম্বোসাইটোপেনিয়া ও প্যানসাইটোপেনিয়া মাঝে মাঝে ঘটে যা ওষুধ বন্ধ করলে দুরীভূত হয় যদিও মৃত্যু ঝুঁকি আছে । মাথা ঝিমঝিম করা , মাথা ব্যথা , এটাক্সিয়া , ত্বকে ফুসকুড়ি , পন্ডিউলার ইরাপশন , প্রুরাইটাস , নিয়ন্ত্রনহীন চলাফেরা , কালচে মূত্র ( মেট্রোনিডাজলের মেটাবলাইটের কারনে ) , মায়ালজিয়া এবং আর্থ্রালজিয়া এবং ক্ষণস্থায়ী দৃষ্টি জটিলতা যেমন ডিপ্লোপিয়া এবং মায়োপিয়া পরিলক্ষিত হয় , কিন্তু খুবই কম ক্ষেত্রে ঘটে ।
মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেট গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদানকালে ব্যবহার :
গর্ভাবস্থায় মেট্রোনিডাজল রের নিরাপত্তা সম্পর্কে অপর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া গেছে কিন্তু বহু বছর ধরে কোন খারাপ পরিণতি ছাড়াই সচরাচর ব্যবহৃত হয়ে আসছে । মেট্রোনিডাজল গর্ভবর্তী মায়েদের এবং দুগ্ধদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে দেয়া উচিৎ নয় , যদি না চিকিৎসক এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন ; এসব ক্ষেত্রে স্বল্প বা উচ্চমাত্রা নির্দেশিত নয় ।
মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেট ব্যবহারে সতর্কতা :
১০ দিনের অধিক মেট্রোনিডাজল সেবনের ক্ষেত্রে নিয়মিত ক্লিনিক এবং পরীক্ষাগারে পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দেয়া হয় । যেসব রোগীর হেপাটিক এনসেফালোপ্যাথী রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে মেট্রোনিডাজল সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিৎ । দৈনিক মাত্রা এক – তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনা উচিৎ এবং দিনে একবার ব্যবহার করা উচিৎ।
মেট্রোনিডাজল – অন্য ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া :
ডাইসালফিরাম জাতীয় প্রতিক্রিয়া ঘটার সম্ভাবনা থাকায় মেট্রোনিডাজল চিকিৎসা চলাকালীন এবং পরবর্তীতে কমপক্ষে ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত এলকোহল গ্রহন না করার পরামর্শ দেয়া হয় । মুখে সেব্য এন্টিকোয়াগোলেন্ট ওয়ারফারিন এবং মেট্রোনিডাজল একত্র ব্যবহারে ওয়ারফারিনের এন্টিকোয়াগোলেন্ট কার্যকারিতা বেড়ে যাবার প্রবণতা আছে । লিথিয়াম এবং মেট্রোনিডাজল একত্র ব্যবহারে লিথিয়াম জমে যাওয়া এবং পরবর্তীতে বৃক্ক নষ্ট হবার উল্লেখ পাওয়া যায় । মেট্রোনিডাজল ব্যবহারের পূর্বে লিথিয়াম চিকিৎসা কমানো বা বন্ধ করা উচিৎ । মেট্রোনিডাজল ৫ – ফ্লোরোইউরাসিলের নির্গমন কমায় এবং যার ফলে ৫ – ফ্লোরোইউরাসিলের বিষাক্ততা বেড়ে যায় ।
সংরক্ষণ : আলো থেকে দূরে ঠান্ডা ( ২৫ ° সে . এর নীচে ) ও শুষ্কস্থানে রাখুন ।
আরও পড়ুন – নেপ্রোক্সেন কি। কেন এবং কিভাবে সেবন করতে হয়।
Trade Namer | Company | Reveiw |
Amodis | Square | **** |
Dirozyl | Acme Lab | *** |
Filmet | Beximco | ***** |
Flamyd | Incepta | ***** |
Metco | Eskayef | ** |
Metro | Ziska | **** |
Metryl | Opsonin | ***** |
Varizil | Drug Int | **** |