সতর্কতা

মোবাইল ও কম্পিউটার ব্যাবহারে চোখের কি ক্ষতি হচ্ছে | চোখের যত্নে কি করবেন

চোখের যত্ন নিতে ভুল হলে, শেষ বয়সে এর খেসারত দিতে হবে, এটা নিস্বন্দেহে বলা যায়। বিজ্ঞানের বৈপ্লবিক যুগে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় যতটা সহজতর হয়েছে, স্বাস্থ্যঝুঁকিও ততটা বেড়েছে। আগের তুলনায় চোখের সমস্যা নিয়ে, বিভিন্ন চক্ষু হাসপাতালে অনেক তরুনদের উপস্থিতিই তা প্রমান করে।

কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ব্যবহারে চোখের যত্ন

কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ব্যবহারে চোখকে নিরাপদ না রাখতে পারলে, চোখের পাওয়ারে সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষকরে, চোখের মাইনাস পাওয়ার বেড়ে যায়। এর জন্য কম করে হলেও তিন ফুট দূরুত্বে মনিটর অথবা ল্যাপটপ এর অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

তাছাড়া আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, কিছু কিছু মনিটরল্যাপটপ এ প্রতি মিনিটে ৩-৪ বার চোখের দৃস্টি অন্যদিকে সরাতে হবে। এবং একটানা দৃস্টিপাত করা যাবেনা। পেশাদার কম্পিউটার অপারেটরগন চোখ পরিক্ষা করে অথবা ব্লুলাইট প্রটেকশন গ্লাস ব্যাবহার করতে পারেন।

মোবাইল ব্যাবহার শিশুদের জন্য খুব ক্ষতিকর

মোবাইল ব্যাবহার করেনা এমন পরিবার পাওয়া মুশকিল। এন্ড্রয়েড ফোনের কল্যানে এখন অনেক বাচ্চাদের কান্না থামানো বা বায়না মেটানো এখন অঘোষিত নিয়মে পরিনত হয়ে গেছে। বাচ্চাদের খাওয়াতে গিয়ে মোবাইলে কার্টুন দেখানো, বা কোন গান শুনিয়ে কান্না থামানো অনেকটা ঔষধের মত কাজ করে।

তবে এটা খুব ক্ষতিকর! যা একটি শিশুর চোখ ও মস্তিস্কে বিরুপ প্রভাব পরতে পারে। অনেক হাসপাতাল ও ডক্টর চেম্বার ঘুরে দেখেছি, শুধু মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারনে, অনেক বাচ্চাদের চোখ ট্যারা সহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে এসেছেন।

কিছুদিন আগে এক রিপোর্টে দেখলাম বাচ্চার মানুষিক বিকৃতি সৃস্টি হয়েছে। এসব অপব্যাবহার শিশুর জীবন নস্ট করে দিতে পারে।

এন্ড্রয়েড টেলিভিশন ও এল ই ডি টিভি দেখতে সতর্কতা

এন্ড্রয়েড টিভিএল ই ডি টিভি এযুগের আরেকটি বৈপ্লবিক ভার্সন। যা আধুনিকতার সেরা উদাহারন। আগের সি আর টি টিভির যুগ শেষ বললেই চলে। তবে এল ই ডি এন্ড্রয়েড টিভি দেখতে হলে, কিছুটা সতর্কতা থাকতেই হবে।

অন্যথায় চোখের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।সতর্কতা বলতে যা বুজাতে চাই, তা হলো- অন্তত ৫-৬ ফুট দূরুত্ব টিভির অবস্থান থাকতে হবে। টিভির ব্রাইটনেস ও কালার লো তে রাখা উচিত। দীর্ঘসময় টিভির দিকে না থাকিয়ে কিছুক্ষন পর পর অন্যদিকে দৃস্টি দেয়া।

অন্ধকার ঘরে বা লাইট নিভিয়ে টিভি না দেখা। ব্লুলাইট প্রটেকশন গ্লাস ব্যাবহার করা। দিনের বেলায় ঘরের জানালা খুলে রাখা। এসব সতর্কতায় সমস্যা সমাধান না হলেও, কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে।

ব্লু লাইট মানে কি

ব্লু লাইট হলো অন্ধকারে মোবাইল থেকে নির্গত হওয়া একপ্রকার আলোকরশ্মি। আমরা ঘরের লাইট বন্ধ করে যখন মোবাইল চালাই, তখন যে আলো আমাদের চোখকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, মুলত তাকেই ব্লুলাইট হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সহজে বুজার জন্য এ যুক্তিটা তুলে ধরা হলো। দিনের আলোতে তেমন সমস্যা না হলেও, রাতের অন্ধকারে চোখের সমস্যা হয়। তাছাড়া রাত জেগে মোবাইল চালানোর কারনে, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে, মস্তিস্কের দূর্বলতা বেড়ে একসময় স্মৃতিশক্তি কমে যেতে পারে বলে, অনেক চিকিৎসক একমত হয়েছেন।

তাছাড়া অনিয়মিত ঘুম এবং দেরী করে ঘুম থেকে জাগার কারনে লিভারজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। খাবারে রুচি কমে যাওয়াসহ শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিবে। যৌনদূর্বলতাও দেখা দেয়ার আশংকা করেছেন অনেক চিকিৎসক।

তাই, পাঠকের প্রতি অনুরুধ থাকবে, আমরা প্রযুক্তির সবগুলোই ব্যাবহার করবো। কিন্তু এর অপব্যবহারের কারনে, নিজের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলবনা। ঠিক যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই ব্যবহার করবো। অন্যথায় ডাক্তার হাসপাতাল ও আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি আমাদের পাওনা হয়ে দাড়াবে।

2 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
X