ঔষধ পরিচিতিরোগ নির্নয়স্বাস্থ্য টিপস

ব্যথার ট্যাবলেট এর নাম কি জেনে নিন | Pain Killer

ব্যথার ট্যাবলেট এর নাম বলতে গেলে কত রকমের ব্যাথা আছে তা জানতে হবে। একে একে সবগুলো ব্যাথার ট্যাবলেট এর নাম এখানে লিখে দিবো। পরিচিত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেবন করবেন। কারন অনেক সময় ব্যাথার উপসর্গ অনুযায়ী ঔষধ ভিন্ন হতে পারে। সাধারন অভিজ্ঞতা নেয়ার জন্য বা প্রথমিক চিকিৎসা জেনে রাখার জন্য এই লেখা।

মাথা ব্যাথার ট্যাবলেট কি

সাধারনত হালকা ব্যথা হলে এনালজেসিক ট্যাবলেট প্যারাসিটামল – ব্যথা অনুযায়ী ৫০০-৬৬৫ মিগ্রা ১ টা করে দিনে ৩ বার খাওয়া যায়। বেশী হলে সাথে ফ্লুপেনটিক্সল & মেলিথাসিন ১ টা করে ২ বার পর্যন্ত সেবন করতে পারেন। তীব্র মাইগ্রেন থাকলে পিজোটোফেন ০.৫ মিগ্রা ২ -৩ বার সেবন করা যায়। সাথে প্যারাসিটামল চলবে। এছাড়াও শুধু ব্যাকলোফেন ৫ মিগ্রা ও প্যারাসিটামল ৫০০ মিগ্রা দিয়েও মাইগ্রেশনের চিকিৎসা করা যায়। এগুলো অবস্থার উপর নির্ভর করবে। তবে আরও জানতে হবে।

পেট ব্যথার ট্যাবলেট কি

পেটের ব্যথা বিভিন্ন কারনে হয়ে থাকে, যদি গ্যাস্ট্রিক থেকে ব্যথা হয়, তাহলে ইসোমিপ্রাজল ২০-৪০ মিগ্রা ট্যাবলেট অথবা ক্যাপসুল ১ টি করে দিনে ২ বার খাবার আধ ঘন্টা আগে এবং সাথে এ্যালজিন ট্যাবলেট ৫০ মিগ্রা ১ – ২ টি করে দিনে ৩ বার সেবন করা যায়। পেট ব্যথায় আরেকটি ঔষধ যোগ করা যেতে পারে, তা হলো – ট্রিপটিন ১০ মি গ্রা, রোজ রাতে ১ টি ট্যাবলেট এভাবে ৫-৭ দিন খাওয়া উচিত। এরপরও যদি ব্যাথা না কমে, তাহলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে রোগ নির্নয় করা উচিৎ।

কোমর ব্যথার ট্যাবলেট কি

কোমর ব্যথার জন্য রোগী নারী নাকি পুরুষ তা জানার প্রয়োজন। নারী হলে, মাসিকের সমস্যা থেকে বা বাচ্চা প্রবের পর থেকে কোমর ব্যথা শুরু হলে ভাল ডাক্তার দেখাতে হতে পারে। পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ও নিউরো ভিটামিন এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
পুরুষ হলে একটু ভিন্ন, ভারী কাজ অথবা দীর্ঘ সময় বসে কাজ করা থেকে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। এর জন্য প্রথমিক ঔষধ হতে পারে এসিক্লোফেনাক ট্যাবলেট ১০০ মিগ্রা দৈনিক ২ বার, ৫-৭ দিন। সাথে ক্যালসিয়াম + ভিটামিন ডি ৩ ট্যাবলেট রোজ সকালে ১ টা ১ মাস। আরও প্রয়োজন হলে নিউরো বি ট্যাবলেট ১ টা করে ২ বার সেবন করতে হবে ১-২ মাস। সাথে গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ রাখতে হবে।

রগে ব্যথার ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল কি

রগে ব্যথা এমনিতে হয়না, হয়ত কখনও ব্যথা পেয়েছিলেন, তার জন্য কোন চিকিৎসা নেননি, এজন্য ঐ রগটা কোথাও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে, রক্ত চলাচলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, বা জমাট বেধে যাচ্ছে, তখনই ব্যথা বেড়ে যায় বা একধরনের টাটানি হয়। যদি এমনটাই হয়- তাহলে ঔষধ খেতে হতে পারে দীর্ঘ দিন। কারন এটা ক্রনিক পেইন বা নিউরোপ্যাথিক পেইন। ১ সপ্তাহ বা ১৫ দিনে আরোগ্য হবার কোন সম্ভাবনা নাই। এর ঔষধ যদি বলি, তাহলে প্রথমত প্রিগাবালিন ৫০-৭৫ মিগ্রা দিনে ২ বার ১-২ মাস চলবে, মাথা ঘুরালে সিনারন প্লাস অথবা রিভার্ট ১ টা করে ২ বার খেতে হবে। ক্যালসিয়াম ডি এবং নিউরো ভিটামিন যেকোন ভাল কোম্পানির ঔষধ খেতে হবে দিনে ২ বার। সাথে আরেকটি ঔষধ যোগ করতে হবে এমিট ১০ মিগ্রা রোজ রাতে ১ টা ১ মাস – ২ মাস। মিথাইল প্রেডনিসোলন ৪ মিগ্রা ট্যাবলেট দিনে ১ টা খাওয়া যায় ১৫ দিন। এতে রোগী একটু বেশী আরাম পাবে।

দাতের ব্যথার ট্যাবলেট কি

দাতের ব্যথা এতটা অসহ্যকর যার হয়েছে সে জানে। প্রথমত সাজেশন করবো ইটোরিকক্সিব রোগের তীব্রতা অনুযায়ী ৯০-১২০ মিগ্রা দৈনিক ১ বার ভরা পেটে সাথে গ্যাস্ট্রিকের ঔষধসহ ৩-৫ দিন। কমে গেলে এটা লাগবেনা। তবে এই সমস্যায় এন্টিবায়োটিক ফরজ হয়ে আছে। নরামালি এমোক্সিসিলিন থেকে ক্লিন্ডামাইসিন, সেফরাডিন অথবা সেফুরক্সিম জাতীয় এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। আপনার ব্যথার তীব্রতা ও ইনফেকশনের অবস্থা বুজে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী যেকোন একটি এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা শুরু করবেন। অবশ্যই ৫-৭ দিন বা ১০ দিনও হতে পারে, তবে ১-২ দিনের জন্য এন্টিবায়োটিক খাবেননা। এখানে ছোট থেকে শুরু করে ৪ টি এন্টিবায়োটিক এর নাম দেয়া হয়েছে, এগুলো থেকে যেকোন একটা অবশ্যই লাগবে। মনে রাখবে দাতের ইনফেকশনের জন্য এন্টিবায়োটিক না খেলে এতে হার্টে সমস্যা বাধায়।
তাই ব্যথার ঔষধের সাথে এগুোলোর একটা ফুল কোর্স খেতে হবে। সাথে সিভিট জাতীয় ট্যাবলেট দিনে ২ বার ৫-১০ দিন খাবেন। এবং মেট্রিল ৪০০ মিগ্রা ট্যাবলেট দিনে ২ বার খাবেন ৫ দিন।
এরপরও আবার কিছুদিন পর ব্যথা দেখা দিলে বিডিএস ডাক্তার দেখিয়ে দাতটা ফেলে দিতে হবে।

কানে ব্যথার ট্যাবলেট কি

কানে ব্যথার ট্যাবলেট ও অনেকটা দাতে ব্যথার মতই, ইনফেকশন কেমন তা জেনে ইটোরিক্স ৯০-১২০ মিগ্রা দৈনিক ১ বার ও সাথে সেফুরক্সিম ২৫০-৫০০ মিগ্রা রোগের তীব্রতা বুজে দিনে ২ বার ৭-১০ দিন পুর্নমাত্রায় সেবন করতে হবে। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কানের ড্রপ ব্যবহার করতে হবে। ড্রপগুলো মেনশন করা উচিত হবেনা। কানে কোন কিছু দিয়ে চুলকাবেননা। কানের ভিতরে পানি প্রবেশ করাবেননা।

হাটু ব্যথার ট্যাবলেট কি

হাটু ব্যথার ট্যাবলেট অনেক, এগুলো সাধারণত বাত ব্যথা, সয়াটিকা, অস্ট্রিওপেরোসিস, অর্থাইটিস থেকে ব্যথার সৃস্টি। যার মুল ঔষধ ক্যালসিয়াম, নিউরোবেষ্ট, ভিটামিন বি ১, ৬, ১২ এই জাতীয় ঔষধ। হাড় ক্ষয় হলে আরও কিছু যোগ হবে, জয়েনটেক ম্যাক্স জাতীয় নিউট্রিশনও দিতে হয়। অনেকটা ব্যয়বহুলও বলতে পারেন। তবে সর্টকাটে ১৫ দিন এসিক্লোফেনাক বা ইন্ডোম্যাথাসিন সেবন করা যায় ক্যালসিয়াম ও নিউরোভিটামিনসহ
২ মাস খাওয়ার পর উন্নতি না দেখলে একজন অর্থোপেডিক ডাক্তার দেখানো উচিৎ।

বুকে ব্যথার ঔষধ কি

বুকে ব্যথার ঔষধ কি দেবো, হাজারো কারনে বুকে ব্যথা হয়৷ গ্যাস্ট্রিক থেকে, লাঙ্গসের থেকে, হার্টের থেকে, লিভারের থেকে সর্বশেষ টিবি থেকেও বুকে ব্যথা হতে পারে। প্রথমত হালকা ব্যথা হলে, এসিডিটির ঔষধ কয়েকদিন সেবন করে দেখতেপারেন। সাথে ফ্রেনজিট রোজ ১ টা এবং রাতে ট্রিপটিন ১০ মিগ্রা, এর সাথে বদহজমের জন্য ডমপেরিডন ১ টা করে ৩ বার ১ মাস চলুক। এরপরও ব্যথা হলে, গ্যাস্ট্রোলিভার ডাক্তার দেখাবেন। এখানেও কাজ না হলে একটি এক্স-রে পিএ চেস্ট ভিউ ও একটা ইসিজি করে একজন ভাল প্রফেসার লেভেলের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাবেন। আশা করি কাজ হবে।

মাসিকের ব্যথার ট্যাবলেট কি

মাসিকে স্বাভাবিক সবারই কম বেশী ব্যথা হয়। গরম পানির সেক দিলে কমে যাওয়ার কথা। তবুও যদি তীব্র ব্যথা হয়, তাহলে ন্যাপ্রক্সেন + ইসোমিপ্রাজল ১ টা করে ২ বার আহারের পূর্বে খেতে হয়। সাথে আরেকটি ঔষধ রাখতে হবে, Algin 50 mg ১-২ টি ট্যাবলেট ব্যথা কমার আগ পর্যন্ত ৮ ঘন্টা পর পর খাওয়া যাবে। তবে এত ব্যথা সবসময় হলে হলে, অন্য চিকিৎসার প্রয়েজন। মাস্তুরীন সিরাপ ২-৩ চামচ করে ২-৩ বার ১-২ মাস সেবন করলে এই সমস্যা থাকেনা।

ঘার ব্যথার ঔষধ কি

ঘার ব্যথার কয়েকটি কারন আছে। যা প্রেসার থেকেও হতে পারে, ভারী কাজ থেকেও হতে পারে। আবার ঘুমের ব্যাঘাত থেকেও হয়। এখন আপনাকে জানতে হবে এটি কিসের ব্যথা!
প্রেসার মেপে দেখে যদি দেখেন প্রেসার ঠিক আছে তাহলে হয় ভারী কাজ নাহয় ঘুমের ব্যাঘাত। এর জন্য ব্যাকলোফেন ৫-১০ মিগ্রা দিনে ১ -২ বার ১৫ দিন পর্যন্ত খাওয়া যাবে, সেই সাথে সুলিনডাক ১০০ মিগ্রা ট্যাবলেট দিনে ১-২ বার এসিডিটির ঔষধ সহ ৫-৭ দিন খেয়ে যতে পারনে।

মেরুদন্ডের বা পিঠে ব্যাথার ঔষধ কি

স্পাইনাল কর্ড অনেকটা ম্যাজিক পাইপের মতো, এর ক্ষয় হওয়ারও আশংকা বেশী, তাই ভারী বস্তু উত্তোলন ও বসার কিছু নিয়ম না মানলে এই সমস্যা দেখা দিবেই।
এর কিছু ঔষধের নাম বলে দেই আপাদত হিসাবে- ব্যাকলোফেন ৫-১০ মিগ্রা দিনে ১-২ বার ১ মাস, সাথে কয়ালসিয়াম ডি ও নিউরো ভিটামিন চলুক ১-২ মাস। ফল না পেলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাবেন।

ব্যথার ঔষধ খাওয়ার নিয়ম

NSAID জাতীয় ব্যথার ঔষধ খাওয়ার কিছু নিয়ম নীতি আছে। যা অবশ্যই মানতে হয়। যেমন ডাইক্লোফেনাক, এসিক্লোফেনাক, ইটোরিকক্সিব, কেটোরোলাক, আইবুপ্রোফেন, ইত্যাদি সকল ব্যথানাশক ঔষধ খাবার পর অথবা কিছু কিছু ঔষধ খাবারের মাঝখানে খেতে হয়। এগুলো ডাক্তার অবশ্যই প্রেসক্রিপশনে লিখে দিবেন। এবং রোগীর উচিত ঔষধের দোকান থেকে ফার্মাসিস্টকে নিয়মগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা। আবার আরও একটি বিষয় জেনে নেয়া দরকার, তা হলো NSAID জাতীয় ব্যথানাশক ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল এর সাথে অবশ্যই এন্টি আলসারেন্ট থাকা উচিৎ।

আরও পড়ুন –

Sex Tablet For Men | সেক্স এর ট্যাবলেট

ফেনী দাওয়াখানার জন্ডিসের ঔষধ এর নাম কি

হামদর্দ এর জন্ডিসের ঔষধ | সেবনের নিয়মসহ বিস্তারিত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
X